রাজ্যে একশো দিনের কাজ প্রকল্প সরেজমিনে দেখতে আবার রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় দল। ছবি: প্রতীকী
একশো দিনের কাজে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলের। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপির দাবি, রাজ্যে অনেক বেনিয়ম হয়েছে। ঠিকঠাক হিসাবও দেওয়া হয়নি। এই বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে দেখতে আবার রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় দল। এই দফায় দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় যাবেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
সম্প্রতি এই মর্মে চিঠি এসেছে নবান্নে। সেখানে বলা হয়েছে, একশো দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প নিয়ে তদন্তে ন্যাশনাল লেভেল মনিটরিং টিম (এনএলএম) আসবে রাজ্যে। তিনটি দল চার জেলায় ঘুরবে। তবে কবে, কোথায়, কোন দল যাবে তা জানা যায়নি।
তবে মুর্শিদাবাদে যে দল যাবে তার সদস্যেরা শুক্রবারই কলকাতায় পৌঁছচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের যুগ্মসচিব অমিত শুক্ল রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিব পি উল্গানাথনকে এই মর্মে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত চার জেলার ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প নিয়ে তাদের কাছে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে। কী ধরনের অভিযোগ তা অবশ্য জানানো হয়নি বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। তবে চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে, ওই দলগুলিকে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন যাবতীয় সহযোগিতা করে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চার জেলা প্রশাসনকে ইতিমধ্যে সে বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। দলের সদস্যরা কোনও গ্রামীণ এলাকা পরিদর্শনে যেতে চাইলে যেন সেই ব্যবস্থাও করা হয়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু এলাকা পরিদর্শনই নয়, চার জেলায় জেলাশাসক, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা।
কেন্দ্র যে তিনটি দল পাঠাচ্ছে তাতে ঝাড়খণ্ডের ‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’, জয়পুরের ‘আরাবল্লি ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ’ এবং হরিয়ানার ‘মহাত্মা গান্ধী প্রাকৃতিক চিকিৎসা সমিতি’র সদস্যেরা রয়েছেন।
কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর পিছনে রাজনীতিই দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রাপ্য ১ লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা এখনও কেন্দ্র আটকে রেখেছে। বিজেপির এ টিম, বি টিম, সি টিম পাঠানো হচ্ছে। এর আগেও টিম এসেছে। তারা কোনও দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। তার পরেও এত বার দল পাঠানোর জবাব বাংলার মানুষ দেবে।’’
অন্য দিকে, এই দল পাঠানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘বাংলা মানেই দুর্নীতি। ইতিমধ্যেই অনেকে জেলে গিয়েছে। এ বার গ্রামের মানুষের রোজগার নিয়ে যাঁরা ছেলেখেলা করেছেন, কমিশন নিয়েছেন তাঁদেরও গারদের ভিতরে যাওয়ার সময় এসেছে।’’