(বাঁ দিকে) অশোক ডিন্ডা, শঙ্কর ঘোষ। —ফাইল ছবি।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেহরক্ষীদের নিয়ে বিধানসভায় ঢুকতে গিয়ে বাধা পেলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এবং অশোক ডিন্ডা। মঙ্গলবার বিধানসভায় এসেছিলেন পদ্মশিবিরের এই দুই বিধায়ক। প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোকের গাড়িতেই দেহরক্ষীদের নিয়ে বিধানসভায় ঢুকতে যাচ্ছিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক। বিধানসভার ২ নম্বর গেট দিয়ে গাড়ি প্রবেশের সময় বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীদের নজরে আসে বিষয়টি। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা বিধায়কের গাড়ি থামিয়ে দেন। বিধায়কদের উদ্দেশে বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীরা বলেন, ‘‘আপনারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেহরক্ষীদের নিয়ে বিধানসভায় ঢুকতে পারবেন না। এমন কথা শুনে গাড়ি থেকে নেমে আসেন শঙ্কর-অশোক। বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে তাঁরা জানতে চান, কেন তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বিধানসভায় প্রবেশ করতে পারবেন না?
বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীরা বিজেপি বিধায়কদের জানান, এই বিষয়ে স্পিকারের একটি নির্দেশিকা রয়েছে। যেখানে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা কোনও ভাবেই বিধানসভায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এর পর নিরাপত্তা রক্ষীদের কাছে স্পিকারের প্রকাশ করা ওই নির্দেশিকা দেখতে চান বিজেপি বিধায়কেরা। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে বিধানসভার গেটের দায়িত্ব থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা খবর পাঠান মার্শাল দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে। বিধানসভার মার্শাল এসে বিজেপি বিধায়কদের ওই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে অবগত করান। সঙ্গে ২০২১ সালের ৭ মে প্রকাশিত ওই নির্দেশিকাটিও দেখান। এর পর বিধানসভার বাইরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রেখে বিরোধী দলনেতার ঘরে চলে যান শঙ্কর ও অশোক।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৭ মে বিধানসভার বিধায়ক হিসেবে শপথ নিতে আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই সময় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেন্দুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় জওয়ানদের সঙ্গে বচসা হয় বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় একটি নির্দেশিকা জারি করেন। নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, এ বার থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বিধানসভার বাইরেই থাকবেন। তাঁদের কোনও ভাবেই বিধানসভার অন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। তার পর থেকে বিধানসভার বাইরের ফুটপাথেই তাঁদের থাকতে হয়। সেই নির্দেশিকার প্রতিবাদ জানিয়ে ধারাবাহিক ভাবে গত সাড়ে তিন বছর বিধানসভার বাইরেই নিজের গাড়ির সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রেখে হেঁটে বিধানসভার মূল ভবনে যান বিরোধী দলনেতা। এই তিন বছরে বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্য মিহির গোস্বামী একাধিক বার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানালেও, তা গ্রাহ্য করেননি স্পিকার।