মাথায় হেলমেট, হাতে ঢাল নিয়ে তৈরি কেন্দ্রীয় বাহিনী। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালি, বনগাঁর পরেই কি আরও সতর্ক হল কেন্দ্রীয় বাহিনী? ইডি-র হাতে গ্রেফতার তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যের মেডিক্যাল চেকআপ ছিল সোমবার সকালে। জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। সদস্যদের বেশির ভাগেরই মাথায় ছিল হেলমেট। হাতে আত্মরক্ষার জন্য ঢাল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সন্দেশখালি এবং বনগাঁর ঘটনা থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়েই আরও বেশি সতর্ক হল কেন্দ্রীয় বাহিনী?
গত শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীও। রেশন দু্র্নীতিকাণ্ডের সূত্র ধরে ওই অভিযান। তাঁদের ঘিরে ধরেন স্থানীয় মানুষজন। তৃণমূল নেতার বন্ধ বাড়ির দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করতেই তাঁদের ঘিরে ধরেন গ্রামবাসীদের একাংশ। নিজেদের শাহজাহানের অনুগামী বলে দাবি করা ওই গ্রামবাসীরা এর পর চড়াও হন ইডি আধিকারিকদের উপর। আক্রান্ত হন ইডির তিন অফিসার। তাঁদের মধ্যে এক জনের আঘাত ছিল গুরুতর। সেই সময় ইডির অফিসারদের ল্যাপটপ, মোবাইল, ব্যাগ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইডির অনুমান, ঝামেলার সময় ওই দলের মধ্যে থাকা কেউ ইডির ল্যাপটপ, মোবাইল এবং ব্যাগ সরিয়ে নিয়েছেন। কারণ, সন্দেশখালি থেকে ফেরার সময় আর এই সমস্ত জিনিস খুঁজে পাননি ইডির কর্তারা। এর পর মারমুখী জনতার হাত থেকে কোনও মতে বেঁচে ফেরেন ইডি আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যেরা। কয়েক জনকে অটো ধরে পালাতে দেখা যায়।
সন্দেশখালির পর বনগাঁতেও একই ঘটনা হয়েছে। শুক্রবার রাতেই বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্করকে গ্রেফতার করতে দিয়ে বাধার মুখে পড়েন ইডি অফিসার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যেরা। বনগাঁয় তাঁর বাড়ির সামনে থেকে যখন শঙ্করকে গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, আশপাশে অনেকে জড়ো হন। মহিলারাও ছিলেন সেই দলে। তাঁরা ইডির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ইডির তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বিক্ষোভকারীদের আটকাতে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান। গাড়িতে এসে পড়ে ইট। রাস্তা ফাঁকা করার পরেই এগোয় শঙ্করের গাড়ি।
মনে করা হচ্ছে, সেই পরিস্থিতি থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই সোমবার যখন শঙ্করকে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন যথেষ্ট প্রস্তুত ছিলেন জওয়ানেরা। মাথায় হেলমেট, হাতে ছিল ঢাল।