প্রতীকী ছবি।
একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মতো জল জীবন মিশনের কাজ না-হওয়ায় কেন্দ্র একাধিক বার পশ্চিমবঙ্গকে এই প্রকল্পের গতি বাড়াতে বলেছে। প্রকল্পে অব্যবহৃত টাকা খরচ করার জন্যও চাপ দেয় তারা। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে গতি বাড়ানোর জন্য দৈনিক ২০ হাজার নতুন উপভোক্তার বাড়িতে জলের সংযোগ দিতেই হবে বলে জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বরাদ্দ অটুট রাখতে এবং আগামী বছর ভোটের আগে বিরোধী শিবিরের সমালোচনা ঠেকাতে এ বার প্রকল্পের গতি বাড়াতে বলা হচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জল দিতে ‘জল জীবন মিশন’ চালু করেছে কেন্দ্র। গত জুলাইয়ে ‘জলস্বপ্ন’ নামে ৫৮ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকারও। যদিও কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ অংশীদারিতে চালু জল জীবন মিশনের সঙ্গে তার বিশেষ ফারাক নেই বলে জানায় আধিকারিক মহল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের ব্যাখ্যা, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্রায় দু’কোটি পরিবারে জলের সংযোগ দিতে হবে রাজ্যকে। চলতি অর্থবর্ষে ৫০ লক্ষ পরিবারে জল পৌঁছে দেওয়ার কথা। কিন্তু এখন দৈনিক জল পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে কমবেশি চার হাজার বাড়িতে। এই গতিতে চললে বছর-শেষে লক্ষ্যপূরণ হবে না। রাজ্যের বক্তব্য, লকডাউনের জন্য মার্চ থেকে কাজের গতি কমেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হওয়ায় গতি বাড়ছে না। ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পে এর মধ্যে সাড়ে তিন লক্ষের বেশি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। রোজ ২০ হাজার সংযোগ দিতে বলা হচ্ছে জেলাগুলিকে। সেটা করা গেলে চলতি অর্থবর্ষের শেষে অন্তত ৩০ লক্ষ বাড়িতে জল-সংযোগ পৌঁছে যাবে। এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “২০২৪ পর্যন্ত তিন ধাপে এই কাজ হবে। পরিকাঠামো যেখানে প্রায় তৈরি, আগে জোর দেওয়া হবে সেখানে। পরে বেশি জলসঙ্কটের এলাকায় কাজ হবে। একেবারে শেষে অন্যান্য এলাকা আসবে প্রকল্পের আওতায়।”
কেন্দ্র গত মাসেই জানিয়েছিল, জলজীবন প্রকল্পে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে প্রায় ৯৯৩ কোটির মধ্যে রাজ্য খরচ করেছিল প্রায় ৪২৮ কোটি। আর্সেনিক-ফ্লোরাইড প্রভাবিত এলাকার জন্য বরাদ্দ প্রায় ১৩০৫ কোটির মধ্যে ৫৭৩ কোটির কিছু বেশি টাকা খরচ করা যায়নি। রাজ্যের প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কেন্দ্র-রাজ্য অংশীদারি মিলিয়ে জল জীবন মিশনের জন্য প্রায় ৫৭৭০ কোটি টাকা রয়েছে চলতি বছরের জন্য। তাই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছতে পারলে নতুন কিস্তি পেতে সমস্যা হবে না। “কাজের ভিত্তিতে বরাদ্দ আসবে। প্রকল্পের গতি বাড়লে সেই সমস্যা থাকবে না,” বলেন এক কর্তা।