Supreme Court

২৭ মিনিট না কি ৭ ঘণ্টা? সিবিআইকে কত ক্ষণের ফুটেজ দিয়েছে লালবাজার? তর্ক হল, উত্তর মিলল না

সিবিআই জানাচ্ছে, তাদের হাতে ২৭ মিনিটের ফুটেজ এসেছে। আবার রাজ্যের বক্তব্য, তাদের তরফ থেকে ৭-৮ ঘণ্টার ফুটেজ দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে দু’টি পেনড্রাইভের কথাও উল্লেখ করেন রাজ্যের আইনজীবী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৯
Share:

ফুটেজ ঘিরে ধোঁয়াশা। —প্রতীকী চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েও রাজ্য ও সিবিআইয়ের দু’ধরনের বক্তব্য। গত শুনানিতেই সিবিআই জানিয়েছিল, তারা ২৭ মিনিটের ফুটেজ পেয়েছে। মঙ্গলবারের শুনানিতে ফের সেই বিষয়টির উত্থাপন করেন জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। কলকাতা পুলিশ কেন ২৭ মিনিটের ফুটেজ দিল? বাকি ফুটেজ কেন দেওয়া হল না? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এডুলজি। তখন ফের রাজ্য ও সিবিআইয়ের মধ্যে বক্তব্যে বিস্তর ফারাক উঠে আসে। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, পুলিশ ৭-৮ ঘণ্টার ফুটেজ দিয়েছে। যদিও সিবিআইয়ের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তাতে আপত্তি জানান। আগের মন্তব্যেই অনড় থাকেন তিনি।

Advertisement

এডুলজির সংশয়, সিবিআইকে দেওয়া ডিভাইসে কোনও ধরনের ‘ইনস্ট্রুমেন্ট ব্লক’ ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। যাতে ডিভাইসটিতে কতটা ডেটা ধারণ করা রয়েছে, তা অপরিবর্তিত রাখা যায়। এ কথা শুনে সলিসিটর জেনারেলকে প্রধান বিচারপতি জানান, সিবিআইয়ের কোথাও কোনও সংশয় থাকলে পুলিশকে ডেকে কথা বলা উচিত। কোথাও কিছু ভ্রান্তি রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে সিবিআইকে। পুরো ফুটেজ রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধান বিচারপতি রাজ্যকে আরও জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের তদন্তে সাহায্য করতে হবে কলকাতা পুলিশকে। ডিভিআর-সহ (যে যন্ত্রের মধ্যে একটি হার্ড ড্রাইভে ভিডিয়ো জমা হয়) পুরো ফুটেজ দিতে হবে। যদিও সিব্বলের বক্তব্য, ডিভিআর হস্তান্তরের ভিডিয়ো রয়েছে। তার পরেও কেন সিবিআই ২৭ মিনিটের কথা বলছে, কেন বলা হচ্ছে একটি ক্যামেরার ফুটেজ দেওয়া হয়েছে, তা সিব্বলের কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি। কিন্তু সিব্বল জানান, যা ছিল সবই সিল করে দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতির এজলাসে সিব্বল মঙ্গলবার দু’টি পেনড্রাইভের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, একটি ৩২ জিবির পেনড্রাইভ দেওয়া হয়েছে। সেটিতে পালমোনারি বিভাগে প্রবেশপথের সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। তাঁকে এক প্রকার থামিয়েই মেহতা বলে ওঠেন, “এখানে সেমিনারকক্ষের কথা হচ্ছে।” তখন রাজ্যের আইনজীবী জানান আরও একটি পেনড্রাইভের কথা। সেটিও ৩২ জিবির। সিব্বল বলেন, “আরও একটি ৩২জিবির পেনড্রাইভ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ওই ফুটেজ রয়েছে।” এ কথা শুনে প্রধান বিচারপতি আবারও জানতে চান, কলকাতা পুলিশের কাছে আর কোনও ফুটেজ নেই— এটাই সিব্বলের বক্তব্য কি না। উত্তরে আইনজীবী জানান, কিচ্ছু নেই আর পুলিশের কাছে। সব দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তখন পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন সিবিআই আইনজীবীও। তাঁর বক্তব্য, কত জিবির পেনড্রাইভ সেটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। হতে পারে সেটি ১০০ জিবির। কিন্তু ভিতরে কিচ্ছু নেই। সিব্বল পাল্টা বলেন, “৪০ দিনের উপর হয়ে গিয়েছে। আপনাদের ভাল করে দেখা উচিত।” হাসপাতালে কতগুলি সিসিটিভি রয়েছে, সেই নিয়েও প্রশ্ন ওঠে আদালতে। সিব্বল জানান, আরজি করের সমস্ত ক্যামেরা চারটি হার্ডঅয়্যারের সঙ্গে যুক্ত করা। চারটিই হস্তান্তর করা হয়েছে। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি রাজ্য ও সিবিআই উভয় পক্ষকেই বিষয়টি দেখার জন্য বলেছেন। সিবিআই পুরো ফুটেজ পেয়েছে কি না এবং রাজ্যের কাছেও কিছু দেওয়ার বাকি রয়েছে কি না, তা দেখে নেওয়ার জন্য বলেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement