সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। — ফাইল চিত্র।
সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের রিপোর্ট হাতে পেয়েছে ইডি। সেই আবহে তাঁকে জেলে গিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই। প্রয়োজনীয় অনুমতির জন্য বুধবার কলকাতার বিচার ভবনে বিশেষ আদালতে আবেদন করেছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডেই জেরা করা হবে। সুজয়কৃষ্ণ ছাড়াও নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অয়ন শীল এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জেরা করতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই নিয়ে আলিপুর আদালতকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছে নগর দায়রা আদালত।
বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। ইডির হাতে সুজয় গ্রেফতার হওয়ার আগে গত বছর মে মাসে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। নিজাম প্যালেসে ডেকে তাঁকে জেরাও করে। ২০২৩ সালের ৩০ মে ১১ ঘণ্টা জেরার পর সুজয়কে গ্রেফতার করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরার ফোনে নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি মুছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন সুজয়। সেই রাহুলকেও জানুয়ারি মাসে জেরা করে সিবিআই।
দীর্ঘ টালবাহানার পর সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের রিপোর্ট হাতে পায় ইডি। গত বৃহস্পতিবার কলকাতার কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি থেকে একটি মুখবন্ধ খামে ওই রিপোর্ট তাদের দফতরে এসে পৌঁছয় বলে ইডি সূত্রে খবর। ইডির তরফে কিছু জানানো না হলেও অসমর্থিত সূত্রের খবর, ইডির কাছে থাকা সুজয়কৃষ্ণের ‘কল রেকর্ডিং’ এবং পরে সংগ্রহ করা তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা নিয়ে ইতিবাচক রিপোর্ট হাতে পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে সুজয়কৃষ্ণ যে জড়িত ছিলেন, তার অকাট্য তথ্যপ্রমাণ হিসাবে এই কণ্ঠস্বরকে এত দিন ব্যবহার করতে পারছিল না তারা। কিন্তু এই বিষয়ে জটিলতা অনেকটাই কেটে গিয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। তার পর থেকে দীর্ঘ দিন তিনি হাসপাতালে ছিলেন। মাঝে একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদ্যন্ত্রের অস্ত্রোপচারও হয় সুজয়কৃষ্ণের। তাঁকে হেফাজতে নিতে চেয়ে বার বার চেষ্টা চালায় ইডি। যদিও সফল হয়নি। এ নিয়ে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের দিকেও আঙুল তোলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়েও টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। গত ৩ জানুয়ারি আচমকাই জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার পর ফের এসএসকেএমে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। এ বার তাঁকে জেলে গিয়ে জেরা করতে চাইছে সিবিআই।