মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।
সারদা অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে
খবর, সব কিছু ঠিকঠাক চললে, ১৫ অগস্টের পর তাঁকে ডাকতে চলেছে তারা। মুকুলবাবু অবশ্য বলেছেন, ‘‘সিবিআই যতবার ডাকবে, ততবার যাব। সারদা কাণ্ডে আসল লাভ কার কার হয়েছে, তা জানিয়ে আসব।’’
তদন্তকারী সংস্থার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘মুকুল রায়কে আরও ভাল ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া সারদা তদন্ত অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। অনেকেই দাবি করেছেন, সারদার ব্যাপারে মুকুল সব জানতেন। ফলে তাঁকে আবার ডাকা জরুরি।’’ তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, তৃণমূলের পদাধিকারীদের অনেকেই জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি বিক্রি, দলীয় মুখপত্রের তহবিলের হিসেবনিকেশ, সারদা-সহ অর্থলগ্নি সংস্থার সিট-এর তদন্ত কোন পথে যাবে কিংবা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের টাকায় সারদার চ্যানেল চালানোর মতো সব ঘটনাই ‘মুকুলবাবুর নির্দেশে’ হয়েছে। কিন্তু তিনি একাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, নাকি কারও নির্দেশ পেয়েছিলেন তা সিবিআই যাচাই করতে চায় বলে জানিয়েছেন এক কর্তা।
সিবিআই সূত্রের খবর, সারদা তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। সব কিছু হিসেবমতো চললে মাস দুয়েকের মধ্যেই চূড়ান্ত চার্জশিট পেশ করা হতে পারে। ইতিমধ্যে এই মামলায় ছ’টি অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। সর্বশেষ চার্জশিটে ‘প্রভাবশালী’দের লাভবান হওয়ার কথা জানানো হবে বলে সিবিআই কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন। সেই সূত্রেই এখন তৃণমূলের রাজ্য ও সর্বভারতীয় কমিটির পদাধিকারীদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। সুব্রত বক্সী, তমোনাশ ঘোষ, দীনেশ ত্রিবেদী, ডেরেক ও’ব্রায়েনদের সঙ্গে কথা বলা হয়ে গিয়েছে। দলীয় মুখপাত্রের তহবিলের স্বাক্ষরকারী মানিক মজুমদারকেও ডেকে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মুকুল রায়ের মতো কয়েক জন তৎকালীন পদাধিকারীকে এখনও ডেকে পাঠানো হয়নি। সিবিআইয়ের কর্তারা জানাচ্ছেন, দলের সাধারণ সম্পাদকদের প্রশ্নপর্ব শেষ হলেই ডাকা হবে মুকুলবাবুকে।
ওই কর্তার কথায়, ‘‘যদি মুকুলবাবু সারদা মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে আদালতে সব বলতে রাজি হন, তাতেও সমস্যা নেই। কারণ, সারদার সর্বশেষ উপভোক্তা কে ছিলেন, তা খোঁজাই এখন আমাদের কাজ।’’
সিবিআই কি চূড়ান্ত উপভোক্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে? ওই কর্তা জানাচ্ছেন, পুরুষ উপভোক্তা হলে তাঁকে ডেকে জানতে চাওয়া হবে। অর্থলগ্নি সংস্থার উপভোক্তা কোনও মহিলা হলে আইন মেনে তাঁর পছন্দের স্থানে গিয়েই সিবিআই তদন্তকারীরা জি়জ্ঞাসাবাদ করবেন। তবে শেষ পর্বের তদন্তে কী উঠে আসছে, তার উপর সবটাই নির্ভর করছে।