লটারি-কাণ্ডে অনুব্রতকে জেরা করতে আসানসোল জেলে সিবিআই। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল কি সত্যিই লটারির টিকিটে ১ কোটি টাকা পুরস্কার জিতেছিলেন? তদন্তকারী সিবিআই দল এ বার ঘটনার ‘রহস্যভেদ’ করতে পৌঁছল আসানসোল জেলে। অনুব্রতকে জেরার উদ্দেশ্যে। শনিবারের সকালবেলায় জেলে পৌঁছে যান তদন্তকারী সিবিআই আধিকারিকেরা। জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সামান্য কথা বলার পরে ভিতরে যান। প্রায় ১ ঘন্টা ২০ মিনিট জেরা করার পর সিবিআই আধিকারিকেরা ফিরে যান। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত লটারির টিকিট কেটে এক কোটি টাকা পেয়েছিলেন কি না, তা নিয়েই জেরা করা হয়।
শুক্রবার বোলপুরে ‘রাহুল লটারি এজেন্সি’ নামে একটি লটারির টিকিট বিক্রির দোকানে হানা দিয়েছিলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেখানে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। দোকানের মালিক শেখ আইনুলকে সব কাগজপত্র নিয়ে সিবিআই ক্যাম্পে তলব করা হয়। নির্দেশ মেনে আইনুল দেখা করেন সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে। এর পরে বিকেলে নাহিনা গ্রামের লটারি বিক্রেতা শেখ মুন্নার সঙ্গে বোলপুরের ক্যাম্পে কথা বলে সিবিআই দল। শনিবার মুন্না বলেছেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল আমার কাছ থেকে কখনও লটারির টিকিট কিনেছেন বলে আমার মনে পড়ছে না।’’ এর আগে বুধবার বোলপুরেরই আর এক লটারির টিকিট ব্যবসায়ী বাপি গঙ্গোপাধ্যায়কে তলব করে নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে ডিয়ার লটারির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত এক কোটি টাকার লটারি জিতেছেন। তদন্তে নেমে সিবিআই জেনেছে, রাহুল লটারি এজেন্সি থেকে প্রথম পুরস্কার জেতা ওই টিকিটটি কিনেছিল লাকি লটারি নামে একটি সংস্থা। বিক্রির জন্য তারা ওই টিকিট কিনেছিল। পরে লাকি লটারির কাছ থেকে সেই টিকিট কিনে নিয়ে যান নাহিনা গ্রামের লটারি বিক্রেতা মুন্না। যেই নম্বরের টিকিটটি প্রথম পুরস্কার জিতেছিল, সেটি নাহিনা গ্রাম থেকেই বিক্রি হয়েছে বলে খবর। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ওই টিকিটের ‘মালিক’ অনুব্রত কি টিকিট কাটার জন্য নাহিনা গিয়েছিলেন? না কি অন্য কেউ ওই টাকা জিতেছিলেন?
প্রসঙ্গত, লটারির পুরস্কার জেতার কথা সরাসরি স্বীকার করেননি অনুব্রত। তা নিয়ে হেঁয়ালিও করেছেন। ওই ঘটনার ১০ মাস পর এ বার তদন্তে নামল সিবিআই। একটি সূত্র জানিয়েছিল, বোলপুরের চিত্রা মোড়ের একটি দোকান থেকে কেনা হয়েছিল লটারির টিকিটটি। গরু পাচারের মোটা অঙ্কের কালো টাকা এই লটারি টিকিটের মাধ্যমে সাদা করা হচ্ছে কি না, তাই খতিয়ে দেখতে চাইছে তদন্তকারী সংস্থা।