চিনা গুপ্তচর জাহাজ ইউয়ান ওয়াং-৬। ফাইল চিত্র।
‘ইউয়ান ওয়াং-৫’ এবং পরে ‘ইউয়ান ওয়াং-৬’। নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে ভারত মহাসাগরের জলে ঢুকে পড়ল আরও একটি চিনা গুপ্তচর জাহাজ। শ্রীলঙ্কা-কাণ্ডের ঠিক তিন মাসের মাথায়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ইন্দোনেশীয় বালি উপকূল থেকে ভারত মহাসাগরে ঢুকে পড়া চিনা গুপ্তচর জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং-৬’-এর গতিবিধির উপর সতর্ক নজরদারি চলছে। বঙ্গোপসাগরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অগ্রগতির হদিস পেতেই চিনা জাহাজ ভারত মহাসাগরে ঢুকেছে বলে নিঃসংশয় নয়াদিল্লি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘আমরা আগেই বিষয়টি জেনেছি। কয়েক দিন ধরেই ওই চিনা জাহাজের গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে।’’
২০০৭ সালে নির্মিত ১১ হাজার টনের চিনা নজরদারি জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং-৫’ অগস্ট মাসের গোড়ায় শ্রীলঙ্কার হাম্বনটোটা বন্দরে ভিড়েছিল। ওই জাহাজটিকে কিছু দিনের জন্য পোতাশ্রয় হিসাবে, হাম্বটোটা বন্দরকে ব্যবহার করতে দিতে জুলাইয়ের গোড়ায় শ্রীলঙ্কাকে অনুরোধ জানিয়েছিল বেজিং। ভারতের আপত্তি উপেক্ষা করেই বেজিংয়ের সেই অনুরোধে সাড়া দেয় কলম্বো। মূলত ভারতীয় উপগ্রহের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানোর কাজ করে ওই চিনা গুপ্তচর জাহাজ।
অন্য দিকে, ইউয়ান ওয়াং-৬-এর মূল দায়িত্ব ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও)-র ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের উপর নজরদারি করা। ঘটনাচক্রে, গত বুধবার ওড়িশা উপকূলে সফল ভাবে ফেজ-২ ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স (বিএমডি) কর্মসূচির অন্তর্গত ইন্টারসেপ্টর এডি-১ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম উৎক্ষেপণ-পরীক্ষা করেছিল ডিআরডিও। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষাকে অনেকাংশে মজবুত করবে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত।
ওই পরীক্ষার পরেই ইউয়ান ওয়াং-৬-এর আগমন ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১০ অথবা ১১ নভেম্বর ওড়িশা উপকূলের কাছে আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে ২,২০০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করতে চলেছে ভারত। তার গতিবিধি ‘নজর’ করাই ইউয়ান ওয়াং-৬-এর এ বারের ‘মিশন’।