শুধু ভুবনেশ্বরের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের একটি মামলা এখনও বিচারাধীন। তাই তিনিও এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন।’’
ফাইল চিত্র।
তাঁদের বিরুদ্ধে যে-অভিযোগ আছে, আইন অনুযায়ী তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড বলে আইনজীবী শিবিরের অভিমত। বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে তার থেকেও বেশি সময় কারাবন্দি সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং রোজ ভ্যালি সংস্থার কর্তা গৌতম কুণ্ডুকে বুধবার ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের মামলায় জামিন দিয়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত।
এ দিনের নির্দেশ অনুযায়ী ইডি-র সংশ্লিষ্ট মামলায় তাঁদের জেল হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু অন্যান্য মামলায় তাঁদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ থাকায় আপাতত ওই দুই অভিযুক্তের কারামুক্তির সম্ভাবনা নেই বলে জানাচ্ছে আইনজীবী মহল।
সুদীপ্ত ও গৌতমের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী সম্প্রতি আদালতে আবেদন জানান, ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’-এর যে-ধারায় ওই দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর। সুদীপ্ত ও গৌতম সাত বছরের বেশি জেল হেফাজতে রয়েছেন। সেই কারণে তাঁদের মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানান ওই আইনজীবী।
এ দিন কলকাতার বিচার ভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক সৈয়দ মাসুদ হোসেনের এজলাসে ওই আবেদনের শুনানি হয়। তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, “ওই দু’জন অত্যন্ত প্রভাবশালী। দু’টি ক্ষেত্রেই মামলার তদন্ত চলছে। নতুন তথ্য উঠে আসছে। তাই এই মুহূর্তে এই মামলা থেকে ওঁদের মুক্তি দেওয়া ঠিক হবে না।’’ দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক এক লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে ওই দু’জনকে জেল হেফাজত থেকে মুক্তি দেন। সেই সঙ্গেই বিচারকের নির্দেশ, তদন্ত চলবে এবং মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতমের বিরুদ্ধে ২০১৮-য় ইডি-র দায়ের করা আরও একটি মামলা আছে। তা ছাড়া সিবিআইয়ের মামলায় ওই দুই অভিযুক্ত জেল হেফাজতেই রয়েছেন। দু’জনেরই বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ধারায়। আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, বুধবার ইডি-র এই মামলায় মুক্তি পেলেও তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলা থাকায় সুদীপ্ত ও গৌতমকে এখন জেল হেফাজতেই থাকতে হবে।
ইডি-র মামলায় বছরখানেক আগে সারদা গোষ্ঠীর অন্যতম কর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায় জামিন পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দায়ের করা চারটি মামলাতেও জামিন পেয়েছেন তিনি। তাঁর আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘এ রাজ্যে সিবিআই এবং ইডির মামলা, রাজ্য পুলিশের দায়ের করা সব মামলাতেই জামিন পেয়েছেন দেবযানী। শুধু ভুবনেশ্বরের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের একটি মামলা এখনও বিচারাধীন। তাই তিনিও এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন।’’