—ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। বস্তুত, সন্দেশখালিতে ইডির উপ হামলার ঘটনায় এটাই সিবিআইয়ের প্রথম গ্রেফতারি। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন শাহজাহান শেখ-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা জিয়াসুদ্দিন মোল্লা। তিনি সরবেড়িয়া-আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে দিদারবক্স মোল্লা এবং ফারুক আকুঞ্জি নামে শাহজাহানের আরও দুই শাগরেদকে। দিদারবক্স পেশায় নিরাপত্তারক্ষী। তবে ফারুকের পেশা নিয়ে কিছু জানা যায়নি।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন মামলার তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। কিন্তু ইডির আধিকারিকদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে। ওই দিনের ঘটনায় জিয়াউদ্দিন-সহ আরও কয়েক জন নেতা সিবিআইয়ের সন্দেহের তালিকায় ছিলেন। সোমবার নোটিস দিয়ে জিয়াসুদ্দিন, দিদারবক্স এবং ফারুককে ডেকে পাঠানো হয় কলকাতার নিজ়াম প্যালেসে। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গ্রেফতার করা হয়েছে। জিয়াসুদ্দিনের আইনজীবী জানান, সন্ধ্যা ৬টায় তিনি সিবিআইয়ের কাছে খবর পান যে তাঁর মক্কেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।গত ৫ জানুয়ারি রেশন মামলার তদন্তে গিয়ে শাহজাহানের ‘অনুগামীদের’ হাতে প্রহৃত হন ইডির পাঁচ আধকারিক। মার খেয়ে তিন আধিকারিককে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। ইডি অভিযোগ করে, শুধু মারধরই নয়, তাঁদের আধিকারিকদের কাছে থাকা মোবাইল, ল্যাপটপ এবং নগদ টাকাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ইডির উপর হামলার অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই। তদন্তে নেমে সোমবার প্রথম বার তারা শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় কলকাতার সিবিআই দফতরে। ঘণ্টা ছয়েক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় গিয়াসুদ্দিন, দিদারবক্সদের। তার পর তাঁদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজ্য পুলিশের হাতে ধৃত শাহজাহান এখন সিবিআই হেফাজতে। সোমবারই রেশন দুর্নীতি মামলায় শাহজাহান শেখের আগাম জামিনের শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। বস্তুত, রেশন দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার হওয়ার পর সেখান থেকেই উঠে আসে শাহজাহানের নাম। আদালতে ইডি সওয়াল করে ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার হয়েছেন শাহজাহান। কিন্তু অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর মামলায় শাহজাহানকে এখনও হাতে পায়নি ইডি। তার মধ্যে তিনি ওই মামলাতেই আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। ফলে শাহজাহানের অতিরিক্ত হলফনামা জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য শাহজাহানকে এক দিন সময় দিয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ।