প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতিতে ধৃত মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
হাই কোর্ট ইতিমধ্যেই বার বার বলেছে। এ বার নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে সেই একই ধরনের মন্তব্য শোনা গেল কলকাতায় বিচার ভবনের বিশেষ আদালতের বিচারকের মুখেও।
প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতিতে ধৃত মানিক ভট্টাচার্যকে বৃহস্পতিবার ওই কোর্টে হাজির করিয়েছিল ইডি। সেই মামলার শুনানিতে বিচারক বিদ্যুৎকুমার রায়ের মন্তব্য, ‘‘নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে বলেই যোগ্য প্রার্থীরা ধর্নায় বসেছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হলে, (তাঁদের) ধর্নায় বসতে হত না।’’
এ দিন মানিককে কোর্টে হাজির করিয়ে ইডি-র কৌঁসুলি ফিরোজ এডুলজি এবং অভিজিৎ ভদ্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত মানিকের ২৩ কোটি টাকার স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিকে নিয়োগ-দুর্নীতির যোগসূত্রে ৩২৫ জন সাক্ষীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের বয়ান মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
তাঁরা আরও জানান, ২০১৭ সালে কলকাতায় কলামন্দিরে বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজ সংগঠনের একটি সভা হয়েছিল। ওই সভায় মানিক ও তাঁর ছেলে সৌভিক উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বেসরকারি সংগঠনের মাধ্যমে বেসরকারি বিএড ও ডিএলএড কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সৌভিকের সংস্থায় টাকা নেওয়ার বিষয়ে ‘সিদ্ধান্ত’ হয়েছিল। সৌভিকের দু’টি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। ইডি-র দাবি, মানিক ভুয়ো সংস্থা খুলে টাকা নিয়েছেন। যে সংস্থার কোনও ব্যবসাই নেই। অথচ তার নামে আয়কর দেওয়া হয়েছে।
মানিকের আইনজীবীর অবশ্য দাবি, তদন্তের কোনও অগ্রগতি নেই। বয়স এবং অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মানিকের জামিন চান তিনি। জামিনের বিরোধিতা করে ফিরোজ বলেন, মানিক অত্যন্ত প্রভাবশালী, শাসক দলের বিধায়ক। মুক্তি পেলে মামলার সাক্ষ্য ও প্রমাণকে প্রভাবিত করতে পারেন। এর পরেই দুর্নীতি প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন বিচারক।
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে জামিনের আর্জি খারিজ করে মানিককে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। তদন্তকারী অফিসার জেলে গিয়ে মানিককে জেরা করতে পারবেন বলেও আদালত জানিয়েছে।