Higher Secondary

মার্চেই নিয়োগ শেষ করা হোক, দাবি প্রার্থীদের

পুরনো প্যানেল ও মেধা-তালিকা বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে, ২০২১-এর ৪ জানুয়ারি ফের ‘ভেরিফিকেশন’ বা যাচাই শুরু করে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিয়োগপত্রের আশায় দীর্ঘ আট বছর অপেক্ষার পরে আশাভঙ্গ। নতুন করে আশায় বুক বেঁধে আবার প্রতীক্ষা শুরু উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকপদ প্রার্থীদের।

Advertisement

পুরনো প্যানেল ও মেধা-তালিকা বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে, ২০২১-এর ৪ জানুয়ারি ফের ‘ভেরিফিকেশন’ বা যাচাই শুরু করে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। কিন্তু অনেক প্রার্থীরই প্রশ্ন, পুরো প্রক্রিয়ার সময়সীমা ৩১ জুলাই পর্যন্ত ঠেলে দিলে ফের জটিলতার সৃষ্টি হবে না তো? এমন সংশয়-আশঙ্কার কারণ, সামনেই বিধানসভার ভোট। সেই নির্বাচনী আবর্তে পড়ে নিয়োগ-প্রক্রিয়া নাকানিচোবানি খেতে পারে। তাই একাধিক প্রার্থী সংগঠনের দাবি, ফেব্রুয়ারি, খুব বেশি হলে মার্চের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হোক।

দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) অফিসে কয়েক বার ধর্না-অবস্থানে বসেছে পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ। ওই সংগঠনের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, “আমরা চাই, স্বচ্ছতার সঙ্গে সব পদে দ্রুত নিয়োগ হোক। কিন্তু সামনেই তো নির্বাচন। মার্চ থেকেই পুরোদমে ভোটের দামামা বেজে যাবে। তথ্যাদি যাচাই, ইন্টারভিউ, তার পরে প্যানেল তৈরি— নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ ভোটের মধ্যে হবে তো? এই নিয়েই বহু প্রার্থী আশঙ্কায় ভুগছেন। তাই আমরা চাই, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হোক।”

Advertisement

উচ্চ প্রাথমিক: প্রশ্ন


• নিয়োগ প্রক্রিয়া ৩১ জুলাই পর্যন্ত চললে তা ভোটের আবর্তে পড়ে যাবে না তো?


• গ্রামাঞ্চলে নেট-সংযোগ দুর্বল। অনলাইনে ইন্টারভিউ হলে প্রত্যন্ত এলাকার প্রার্থীরা কী করবেন?


• এসএসসি কি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যাবে?

চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, নতুন করে ভেরিফিকেশনের কাজ শুরু হলে অন্তত এক লক্ষ ৮০ হাজার প্রার্থীর তথ্য যাচাই করতে হবে। তার পরে ডাকা হবে ইন্টারভিউয়ে। উচ্চ প্রাথমিকে শূন্য পদের সংখ্যা এখন ১৪,৩৩৯। কলকাতা গেজেট অনুযায়ী যত পদ শূন্য, তার ১.৪ অনুপাতে প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ে ডাকতে হবে। অর্থাৎ ১০০টি শূন্য পদের জন্য ইন্টারভিউয়ে ডাকতে হবে ১৪০ জনকে। সেই অনুযায়ী ১৪,৩৩৯টি শূন্য পদের জন্য ডাকতে হবে ২০,০৭৪ জনকে। এই বিপুল সংখ্যাই প্রার্থীদের মনে আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে তুলছে। তাঁদের প্রশ্ন, করোনা আবহে এত প্রার্থীকে এসএসসি-র অফিসে ডেকে ইন্টারভিউ নেওয়া কি সম্ভব? যদি অনলাইনে ইন্টারভিউ হয়, তা হলে সব প্রার্থী কি সেই প্রক্রিয়ায় ইন্টারভিউ দিতে পারবেন? অনেক প্রার্থী দূরদূরান্তের জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে থাকেন, যেখানে নেট-সংযোগ ভাল নয়। তাঁদের পক্ষে অনলাইনে ইন্টারভিউ দেওয়া কতটা বাস্তবসম্মত, প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

আন্দোলনকারী অন্য সংগঠন আপার প্রাইমারি সংগ্রামী মঞ্চের অর্পিতা প্রামাণিক বলেন, “আমাদের দাবি, ৩১ জুলাই নয়, তার অনেক আগে, মার্চের মধ্যেই স্বচ্ছতা বজায় রেখে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা হোক। এই নিয়ে আমরা ফের আন্দোলনে নামব। সেই আন্দোলনে রাজ্যের সব ছাত্র, যুবক এবং শিক্ষক সংগঠনকে শামিল হতে অনুরোধ করছি।”

হাইকোর্টের শুক্রবারের রায়ের বিরুদ্ধে স্কুল সার্ভিস কমিশন ডিভিশন বেঞ্চে যাবে কি না, শনিবার রাত পর্যন্ত সেই প্রশ্নের উত্তর না-মেলায় চাকরিপ্রার্থীরা চিন্তিত। কমিশনের এক কর্তা বলেন, “রায়ের কপির প্রতিলিপি সবে হাতে এসেছে। ভাল করে পড়ে দেখতে হবে। আমাদের আইনজীবীরা কী পরামর্শ দেন, দেখি। তার পরে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তা নেওয়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement