Calcutta High Court

৮০৫ শিক্ষকের চাকরি বাতিল আটকাল না ডিভিশন বেঞ্চ, নবম-দশম মামলায় একক বেঞ্চের রায়ই বহাল

নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ১৩:২৬
Share:

৮০৫ শিক্ষকের চাকরি বাতিল আটকাল না ডিভিশন বেঞ্চ। ফাইল চিত্র।

নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ৮০৫ জনের চাকরি বাতিল নিয়ে হস্তক্ষেপ করল না ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

সিবিআই ৯৫২ জন শিক্ষকের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট উদ্ধার করে। ওই ৯৫২ জন শিক্ষক মামলায় যুক্ত হতে চেয়েছিলেন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই আর্জি খারিজ করে দেন। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যান ৯৫২ জন। ডিভিশন বেঞ্চের রায়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশে ৮০৫ জনের মধ্যে ৬১৮ জনের চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল এসএসসি। ওই নির্দেশ বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলায় অন্যতম মামলাকারী সেতাবউদ্দিনের আইনজীবী হিসাবে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।

Advertisement

নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মোট ৯৫২ জনের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তাঁদের মধ্যে ৮০৫ জনের উত্তরপত্রে দুর্নীতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। তার পর ৬১৮ জনের নাম প্রকাশ করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এসএসসির ওয়েবসাইটে ওই অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নামপ্রকাশও করা হয়েছে। বুধবার এই মামলারই রায় ঘোষণা করলেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এসএসসি নিযুক্ত ৯৫২ জন নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র বিকৃত করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এই মামলা প্রথমে ওঠে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে। পরে সেই মামলাই হস্তান্তর হয়ে যায় বিচারপতি বসুর একক বেঞ্চে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে মামলাটি চলাকালীন সিবিআই তদন্ত-সহ একাধিক নির্দেশ দিলেও অভিযুক্ত ৯৫২ জন প্রার্থীকে মামলায় যুক্ত করেননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরে বিচারপতি বসুর বেঞ্চে মামলাটি উঠলে তিনি ওই ৯৫২ জনের মধ্যে ৮০৫ জনের চাকরির সুপারিশ পত্র বাতিল করে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। কারণ কমিশনই বলেছিল, এই ৮০৫ জন উত্তরপত্র ওএমআর শিট খতিয়ে দেখে তারা বুঝেছে, তা বিকৃত করা হয়েছে। এই দু’টি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরি হারানো শিক্ষকেরা। আদালত তাদের বক্তব্য শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখে। তবে চাকরি খোয়ানো প্রার্থীদের দাবি অনুযায়ী, একক বেঞ্চের রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি।

বিচারপতি বসুর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে চাকরি হারানো প্রার্থীদের যুক্তি ছিল, আদালত শুধু সিবিআইয়ের উদ্ধার করা উত্তরপত্রের ভিত্তিতেই সমস্ত রায় দিচ্ছে। যদিও ওই উত্তরপত্র আসল কি না, তারই কোনও নিশ্চয়তা নেই। আবেদনকারীদের আইনজীবীরা বলেন, কমিশন নিজেই বলছে আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। তা হলে বুঝতে হবে সিবিআই যে ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে তা ‘মিরর ইমেজ’। অর্থাৎ, এটা মূল নথি নয়। তার পরও সেই নথির ভিত্তিতেই সব কিছু করা হচ্ছে। বুধবার ডিভিশন বেঞ্চ তার রায়ে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এসএসসি তাদের যে ১৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে অবৈধ চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বাতিল করেছিল, তাতে হস্তক্ষেপ করতে চায় না আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement