কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
কলকাতায় এক এবং দিল্লিতে আর এক! রাজ্যে স্কুল নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র এমন দ্বৈত অবস্থান নিয়েই মঙ্গলবার প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে এসএসসি যে অবস্থান নিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তাদের অবস্থান ভিন্ন হয়ে গিয়েছে। তাই এসএসসি-র নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা জরুরি। এ দিন বিচারপতির নির্দেশ, এ ব্যাপারে এসএসসিকে সাত দিনের মধ্যে নিজের অবস্থান জানাতে হবে। কীসের ভিত্তিতে এসএসসি চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা নিয়েও কোর্টে প্রশ্ন উঠেছে। কোন বৈঠকের মাধ্যমে চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তাও এসএসসি-র কাছে জানতে চেয়েছে আদালত। এ দিন রাজ্য এবং এসএসসির তরফে সওয়াল করা হয় যে মূল মামলাকারী অর্থাৎ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী বেআইনি নিয়োগ চেয়েছিলেন। তিনি নিয়োগ না পাওয়ায় মামলা করেছেন। তাই এই মামলা গুরুত্বহীন। তবে বিচারপতি বসাক সেই যুক্তি মানেননি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী বেআইনি নিয়োগ চেয়ে পাননি বলে এসএসসি-ও বেআইনি নিয়োগ করবে, এটা আইন হতে পারে না।
রাজ্যে এসএসসি মারফত স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পাশাপাশি অবৈধ ভাবে নিযুক্ত হওয়ার দায়ে বহু শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছিল কোর্ট। পরে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায় এবং শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় যে কলকাতা হাই কোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে এই সব মামলার শুনানি হবে। ছ’মাসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই নির্দেশ মতো হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি স্থির করেন, বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। সোমবারই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশুগুপ্ত এবং ফিরদৌস শামিম মামলাগুলির দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই মতো মঙ্গলবার শুনানি হয়।
এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ পুরো প্যানেল বাতিলের প্রসঙ্গও তুলেছে। কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পুরো প্যানেল বাতিল করা হলে কিছু যোগ্য প্রার্থীও চাকরিহারা হতে পারে। তাই এই মামলায় সব দিক বিচার করা জরুরি।