ফাইল চিত্র।
পুজো কমিটিগুলিকে রাজ্য সরকারের অনুদান দেওয়া নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিও। সংক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে, তখন পুজোর অনুমতি দেওয়া হল কেন— এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। সিটু নেতা সৌরভ দত্তের দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের দুর্গাপুজোয় অনুদান দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ইদ বা অন্যান্য উৎসবে রাজ্য সরকার অনুদান দেয় কি না, তা-ও জানতে চান তিনি। দুর্গাপুজোকে ‘বাঙালির গর্ব’ হিসেবে উল্লেখ করেও এ ভাবে কোনও ধর্মীয় উৎসবে অনুদান দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি আদালতের পর্যবেক্ষণ, এ ভাবে অনুদান দেওয়া গণতান্ত্রিক কাঠামোর বিরোধী।
রাজ্যের প্রায় ৩৭ হাজার পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান ঘোষণার পর থেকেই এই বিতর্ক শুরু হয়। বুধবার আরও কিছু নতুন ক্লাবকে অনুদান দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। সৌরভবাবু ছাড়াও পুজো নিয়ে অজয়কুমার দে নামে আরও এক ব্যক্তি মামলা করেছেন। পুজোর ভিড় যেমন সংক্রমণ বাড়াবে, তেমনই এমন অনুদান সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন মামলাকারীরা।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন হাইকোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য প্রশাসন। এমনকি আদালতে এই অনুদানের পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি কাজ করছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে বলে আদালত সূত্রের দাবি।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি, কমল দৈনিক মৃতের সংখ্যা
আরও পড়ুন: কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাজ্যের নিরাপত্তা অধিকর্তা, উদ্বেগ
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এ দিন আদালতে জানান, মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার কেনার জন্য এই অনুদান দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সে জবাবে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, সরকার নিজে ওই মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার কিনে দিলে কম খরচ হত। ভিড় ঠেকাতে কী পরিকল্পনা সরকার করেছে, তা-ও জানতে চায় কোর্ট। বস্তুত, লকডাউনের শুরু থেকেই পুলিশের উপর নির্ভর করেই প্রশাসন এগিয়েছে। পুজোর সময়েও তাদের উপরেই মূল দায়িত্ব। সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, সব কাজ পুলিশ করলে ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়া হচ্ছে কেন? আজ, শুক্রবার এই মামলাটির ফের শুনানি রয়েছে। তার পাশাপাশি শুনানি হতে পারে অজয়বাবুর মামলাটিরও। অনুদান বিতর্কে আদালত কী নির্দেশ দেয়, আপাতত সে দিকেই নজর অনেকের।