কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল ছবি।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য বিরোধী শিবিরের প্রার্থীদের একটি জায়গায় জড়ো হতে হবে। সেখান থেকে তাঁদের পাহারা (এসকর্ট) দিয়ে মনোনয়ন কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাবেন থানার ওসি। বৃহস্পতিবার এমন নির্দেশই দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মনোনয়ন জমা দিতে না পেরে পঞ্চায়েতের চার প্রার্থী হাই কোর্টে মামলা করতে এসেছিলেন। হাই কোর্টের নির্দেশ, ওই প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে নিয়ে যাবে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। হেয়ার স্ট্রিট থানাকে সাহায্য করবে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ। হাই কোর্ট পুলিশকে দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশও দিয়েছে।
বৃহস্পতিবারই পঞ্চায়েতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়ন জমা দিতে না পেরে আইএসএফ এবং বিজেপি প্রার্থীরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অভিযোগ ভাঙড়-সহ দুই ২৪ পরগনার একাধিক কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই মনোনয়ন প্রক্রিয়া ঘিরে অশান্তির কথা জানাতে আলাদা আলাদা ভাবে নবান্ন এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন আইএসএফ এবং বিজেপি নেতারা। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে বিজেপি এবং আইএসএফ ছাড়াও মামলা করে রাজ্যের প্রাক্তন শাসকদল সিপিএম।
সব মামলাগুলির একত্রে শুনানি হয়েছে বিচারপতি মান্থার বেঞ্চে। বিচারপতির নির্দেশ, মনোনয়ন দিতে যাওয়ার জন্য ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর ৮২ জন প্রার্থী দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এবং কাশীপুর থানায় জড়ো হবেন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপারের অফিসে জড়ো হবেন সেখানকার বিজেপি প্রার্থীরা। ওই জায়গা থেকে তাঁদের পাহারা দিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে নিয়ে যাবে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার ভাঙড়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে বোমাবাজি এবং গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। তার পর উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা যেমন বসিরহাট, ক্যানিং, সন্দেশখালিতেও মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়। বুধবার এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যদিও নওশাদের দেখা হয়নি। পরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের গেটের বাইরে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে অশান্তির অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান। এর পর বৃহস্পতিবার সকালে বিজেপি, আইএসএফ এবং সিপিএম মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঝামেলার অভিযোগ জানিয়ে হাই কোর্টে মামলা করে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে ওই মামলার শুনানি হয়। সেখানেই পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।