কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
মালদহে নাবালিকার রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের তদন্তে অসন্তুষ্ট কলকাতা হাই কোর্ট। পাঁচ বছর আগের ঘটনায় পুলিশের তদন্ত সঠিক পথে এগোয়নি। ওই ঘটনায় পুনরায় তদন্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের নির্দেশ, ঘটনাটি পুনরায় তদন্ত করবে সিআইডি। পুলিশি তদন্তের ফাঁকফোকর মাথায় রাখতে হবে রাজ্যের প্রধান তদন্তকারী সংস্থাকে।
২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর মালদহের কালিয়াচক আবাসিক মিশনের হোস্টেলে মৃত্যু হয় একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নাজিমা খাতুনের। হস্টেলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। তাঁদের দাবি, ওই ছাত্রী ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তা মানতে চায়নি ওই ছাত্রীর পরিবার। তাদের বক্তব্য, পরিকল্পনামাফিক মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মালদহের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতেই নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেন মৃত ছাত্রীর বাবা নাজিমুল হক। উচ্চ আদালতে তাঁর বক্তব্য, মেয়ের সঙ্গে পরিবারের কাউকে দীর্ঘ দিন ধরে দেখা করতে দেননি আবাসন কর্তৃপক্ষ। মৃত্যুর দিন পর এক শিক্ষক ফোন করে খবর জানান। মেয়ের মৃত্যু নিয়ে অনেক রহস্য রয়েছে। তা সমাধান না করেই চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
নাজিমুলের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘এই তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সব সাক্ষীদের নাম প্রথম চার্জশিটে দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া ওই ঘটনা সম্পর্কে তথ্য দিতে পারতেন এমন অনেক সাক্ষীর বয়ানই নেয়নি পুলিশ।’’ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, নিম্ন আদালত পরিবারের অভিযোগগুলিকে গুরুত্ব দেয়নি। এক, পরিবার অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে চেয়েছিল। দুই, তারা এটিকে আত্মহত্যা বলছে না। ফলে ওই মৃত্যুর রহস্য সমাধান করার প্রয়োজনীয়তা ছিল। কিন্তু পরিবারের ওই দাবিগুলি বিবেচনা করেনি নিম্ন আদালত। বিচারপতি পাল জানান, ওই রহস্যমৃত্যুর তদন্ত পুনরায় করার দরকার রয়েছে।