হাই কোর্টের নতুন নির্দেশের ফলে গোটা ত্রাণ দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করবে সিএজি। — ফাইল ছবি।
মালদহে বন্যাত্রাণের ৫৮ কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-কে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ওই টাকা কোথায়, কী ভাবে গিয়েছে, তা তদন্ত বা অনুসন্ধান করে দেখবে সিএজি। ৮ সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। এর আগে মালদহের দুই পঞ্চায়েত সমিতিতে ত্রাণের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও সিএজি-কে তদন্ত করতে বলেছিল আদালত। এখন হাই কোর্টের নতুন নির্দেশের ফলে গোটা ত্রাণ দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করবে সিএজি।
২০১৭ সালে মালদহের একাধিক এলাকায় বন্যা হয়। বন্যায় ১০২টি অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। অভিযোগ, সেই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ওই আর্থিক অনুদান পৌঁছয়নি। ওই বন্যায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া, চাঁচল, গাজোল, হবিবপুর, ইংরেজ বাজার-সহ ১২টি ব্লক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মামলাকারীর আইনজীবী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং শামিম আহমেদের অভিযোগ, ২০১৭ সালে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পর সেই তালিকা বদলে যায়। তাঁদের দাবি, একই ফোন নম্বরে একাধিক ব্যক্তির নাম দেখিয়ে টাকা দেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যের বাসিন্দা নন, এমন ব্যক্তিকেও ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন বিধায়ক মোস্তাক আলম।
গত বছর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাঁরা প্রকৃত ত্রাণের টাকা পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এর পরেই সিএজিকে বরোই এবং হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। মঙ্গলবার সেই তদন্তেরই রিপোর্ট দু’মাসের মধ্যে দিতে বলল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১২ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।