শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কাঁথি সমবায় সমিতির ব্যাঙ্কের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি মঞ্জুর করল না কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের একক বেঞ্চ জানায়, অবকাশকালীন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি করা সম্ভব নয়। বড়দিনের ছুটির পরে আদালত খুললে শুনানি করা যেতে পারে।
গত ১৫ ডিসেম্বর কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে ১০৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা ১০১টি আসনে জিতেছিলেন। বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা জিতেছিলেন ছ’টিতে। আর একটি আসনে জয় পান নির্দল প্রার্থী। এর পরে ওই নির্বাচন নিয়ে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। শঙ্কর বেরা-সহ ৫১ জন মামলা দায়ের করেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ওই ব্যাঙ্কের নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন। মামলাকারীদের বক্তব্য, ওই নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি। ভোটে অনিয়ম, কারচুপি এবং বুথদখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মামলাকারীরা। তাঁরা হাই কোর্টে ওই নির্বাচন বাতিলের আবেদন জানান।
সোমবার হাই কোর্টে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের সওয়াল, মামলাকারীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া ভোটারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা, সিসিটিভি বসানোর মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে। এজির ওই বক্তব্যের পরে আদালত ওই মামলাটি জরুরি ভিত্তিতে শুনানি করতে রাজি হয়নি।
যদিও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সোমবার দাবি করেন, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিজেপি লড়াই করেনি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিজেপি লড়াই করিনি। ভুল তথ্য বলা হচ্ছে। বিজেপির কোনও প্রতীক নেই। দলের অভ্যন্তরীণ নির্দেশ ছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে থাকবে সে চাইলে সাহায্য করা হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি ১৯৯৩ সাল থেকে প্রতিনিধি। ২০০৬ সাল থেকে ডিরেক্টর। ২০০৯ সাল থেকে চেয়ারম্যান। আমি শেয়ারহোল্ডার। অনেক সময় আমি জেলায় থেকে ভোট দিতে যাইনি। আমার দল লড়াই করেনি। দল লড়লে লড়ার মতো লড়ে। যেমন লোকসভায় দুটোতে লড়ে হারিয়ে দিয়েছি। বিধানসভায় লড়ব ১৬টাই দেব পদ্মফুলকে। পূর্ব মেদিনীপুরে ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়েছি।’’
তবে সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেন শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কেই ভোট দিতে দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আপনারা (তৃণমূল) আর পুলিশ ছাপ্পা মেরেছে। ভোট জিহাদ চলছে।’’ প্রসঙ্গত, শুভেন্দু কাঁথির সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে ‘বিজেপি লড়েনি’ বলে দাবি করলেও তাঁর পিতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারী গত ১৫ ডিসেম্বর ভোটপর্ব চলাকালীন দাবি বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি জিতবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘এই সমবায়ে বিজেপির জয় নিয়ে আমরা ভীষণ ভাবে আশাবাদী। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিআরপিএফ দিয়ে এই সমবায়ের ভোট হচ্ছে। যা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছে তৃণমূলীরা। তবে সব বুথে তো কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। সেখানে বিক্ষিপ্ত অশান্তি করার চেষ্টা চালিয়েছে তৃণমূল।’’