কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। —ফাইল চিত্র।
টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল নিয়ে দৃশ্যতই অসন্তোষ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। প্রশ্নপত্রে ২৩টি ভুল ছিল জানিয়ে মামলা করা হয়েছিল তাঁর এজলাসে। মামলা শুনে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘১৫০ নম্বরের পরীক্ষায় ২৩টি প্রশ্নে ভুল! পরীক্ষার্থীরা তো কেউ আইনস্টাইন নন, যে কোনটা সঠিক তা আবিষ্কার করে উত্তর দেবেন।’’
মঙ্গলবার টেট পরীক্ষার ভুল প্রশ্ন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি মান্থার এজলাসে। এই মর্মে হাই কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে। সেগুলিই শুনছিলেন বিচারপতি মান্থা। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বিচারপতিকে জানান, ২০২২ সালের টেটের প্রশ্নপত্রে ২৩টি প্রশ্নে ভুল রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও ওই টেটের ১৫টি প্রশ্ন ভুল নিয়ে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। তবে এ বারের মামলায় ভুলের সংখ্যা আরও বেড়েছে। আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি জানতে চান, কিসের ভিত্তিতে এই প্রশ্নগুলিকে ভুল বলা হচ্ছে? জবাবে পর্ষদের আইনজীবী আদালতকে জানান, অনেকগুলি প্রশ্ন সঠিক রয়েছে। শুধু কয়েকটি প্রশ্ন নিয়েই বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু আদালত সেই যুক্তিতে আমল দেয়নি। বিচারপতি বরং তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘‘১৫০ নম্বরের পরীক্ষায় ২৩টি প্রশ্ন ভুল থাকার অভিযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ এর পরেই বিচারপতির সংযোজন, ‘‘কেউ তো আইনস্টাইন নন যে, কোনটা সঠিক আবিষ্কার করে উত্তর দেবেন। প্রশ্ন নিয়ে এমন বিভ্রান্তি না হওয়াই উচিত ছিল!’’
মঙ্গলবার এর পরে বিচারপতি পর্ষদকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে বলেন, কিসের ভিত্তিতে প্রশ্ন ভুল বলা হচ্ছে, প্রমাণ-সহ তার বিবরণ দিতে হবে পর্ষদকে। কী ভাবে? তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারপতি। মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘‘টেটের প্রশ্নে ভুল রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে হবে। যে যে প্রশ্ন ভুল বলে দাবি করা হচ্ছে সেগুলি বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠিয়ে যাচাই করাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা ওই প্রশ্নগুলি যাচাই করে পর্ষদকে নিজেদের মতামত জানাবেন। পর্ষদকে তার ভিত্তিতে রিপোর্ট দিতে হবে কলকাতা হাই কোর্টে। ’’
চার সপ্তাহ পরে এই মামলার শুনানি। তার মধ্যেই টেটের প্রশ্নপত্র নিয়ে রিপোর্ট হাই কোর্টে জানাতে হবে পর্ষদকে।