গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে সর্বত্র চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের মন্তব্য, ‘‘কেউ কাজ করতে চায় না। এ ওকে দেখাচ্ছে, ও তাকে দেখাচ্ছে!’’ রাজ্যকে বিঁধে উচ্চ আদালতের প্রশ্ন, “চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের যে বেতন দেওয়া হয়, তাতে তাঁদের কাছ থেকে আর কত আশা করা যায়?”
প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসার সুবিধার্থে ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ইউডিআইডি কার্ডের এর ব্যবস্থা করে। অভিযোগ, বাংলার মানুষ সেই কার্ড চাওয়ায় আলাদা করে একটি পোর্টালও খোলে রাজ্য। কিন্তু অভিযোগ, যখনই ওই পোর্টালে কেউ নাম নথিবদ্ধ করতে চাইছেন, তাঁদের নাম আগে থেকেই নথিবদ্ধ বলে দেখিয়ে দিচ্ছে। এই বিভ্রান্তির ফলে অনেকেই কেউ কার্ড পাচ্ছেন না। এই অভিযোগ তুলে ‘পরিবার বেঙ্গল’ নামে একটি সংগঠন আদালতে মামলা করে। সেই মামলাতেই প্রশ্নের মুখে পড়ে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের কাজকর্ম। তার প্রেক্ষিতেই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এক জন চিকিৎসক সব কাজ করবেন, এটা আশা করা যায় না! হাসপাতালে ৮০ শতাংশ কর্মী চুক্তিভিত্তিক। ১২-১৩ হাজার টাকা করে তাঁরা বেতন পান। তাঁদের কাছ থেকে কী কাজ আশা করবেন? রাজ্যের সব ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক কর্মী থাকায় দায়সারা মনোভাব থেকে যাচ্ছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এ রাজ্যে কেন আলাদা পোর্টাল? যদি সেটা হয়েও থাকে, কেন্দ্রীয় পোর্টাল থেকে কেন তথ্য নেওয়া হচ্ছে না?’’
এ নিয়ে রাজ্যকে বিঁধেছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘ই-পোর্টালে শীর্ষে রয়েছি, এ কথা এ বার আদালতে এসে রাজ্য বলুক। আমি বুঝিয়ে দেব!’’ রাজ্যের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, বর্তমানে রাজ্যে কত জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী কর্মরত রয়েছেন? তার উত্তর সরকারি কৌঁসুলি দিতে পারেননি। এর পরেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনার জানা উচিত ছিল। মানুষ অনেক দূর থেকে আসেন। কত কত টাকা খরচ করে তাঁরা কলকাতায় থাকেন! সব জায়গায় চুক্তিভিত্তিক কর্মীতে ভরে গিয়েছে। এসএসকেএম হাসপাতালে কত জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছেন? খুব খারাপ লাগে ই-পোর্টাল না খুললে। জয়েন্ট ডিরেক্টর আবার বলছেন, ৪৭০ কার্ড পোর্টালে হয়েছে! এই সমস্যা সাধারণ। এটা ঠিক করে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু তা না করে মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।’’