গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শুভেন্দু অধিকারীকে নেতাইয়ের শহিদ স্মরণ কর্মসূচিতে যোগ দিতে পুলিশি বাধা এবং কাঁথিতে তাঁর বাড়ির সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের হলফনামা চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থার নির্দেশ, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানাতে হবে রাজ্যকে।
শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, আদালতের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে লালগড়ের নেতাইয়ে ‘শহিদ স্মরণ’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার শুনানিপর্বে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, গত ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ের মূল কর্মসূচিতে শুভেন্দুকে ঢুকতে বাধা দেয়নি পুলিশ। কিন্তু উনি ২০১১ সালের নেতাই-কাণ্ডে নিহতদের এক জনের বাড়িতে যেতে চেয়েছিলেন। সে সময় ওই বাড়িতে ‘অন্য একটি পক্ষের’ প্রতিনিধিরা ছিলেন। সৌমেন্দ্রনাথের দাবি, সে সময় শুভেন্দুকে সেখানে যেতে দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল।
হাই কোর্টে দায়ের করা মামলায় শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, তাঁর কাঁথির বাড়ির সামনে রাত ২টো পর্যন্ত উচ্চস্বরে মাইক বাজানো হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর উপর নজরদারির জন্য বাড়ির দরজা, জানালা লক্ষ্য করে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি। এমনকি, নিরাপত্তাজনিত দিক থেকে তাঁর বাড়ি স্পর্শকাতর এলাকা হলেও সেখানে রাজ্যের শাসকদলের কর্মী সমর্থকেরা যখন-তখন মিছিল-সমাবেশ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সৌমেন্দ্রনাথের যুক্তি, নজরদারি নয়, নিরাপত্তার স্বার্থেই বিরোধী দলনেতার বাড়ির সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ। যদিও নিরাপত্তার দিক থেকে স্পর্শকাতর এলাকায় অবাধে মিছিল-সমাবেশ বা আইন ভেঙে গভীর রাত পর্যন্ত মাইক বাজানোর ব্যাখ্যা দেননি তিনি। অভিযোগ প্রসঙ্গে, বিচারপতি মান্থা বৃহস্পতিবার জানান নিরাপত্তার স্বার্থে কোথায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসবে তা শুভেন্দুর সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরপিএফ বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ আলোচনার ভিত্তিতে স্থির করতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২০-র ডিসেম্বরে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে ২০২১-এর জানুয়ারিতে ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা’র দাবিতেও কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন শুভেন্দু। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পরে গত জুন মাসে হাই কোর্টে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার তাঁকে একজন পূর্ণমন্ত্রীর সমতুল নিরাপত্তা দেয়নি। সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী যা তাঁর প্রাপ্য। এখনও তাঁকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।