শাহজাহান শেখ (বাঁ দিকে) এবং কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করা নিয়ে ইডি এবং সিবিআইয়ের ‘হাত’ খুলে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, সিবিআই, ইডি এবং রাজ্য পুলিশ যে কেউ শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করতে পারে।
সন্দেশখালি নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারিতে হাই কোর্টের নির্দেশের পরিবর্তন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। নির্দেশনামার ৮ নম্বর প্যারার পুনর্বিবেচনা চেয়েছিল রাজ্য। সেই মামলার শুনানিতেই বুধবার প্রধান বিচারপতি শাহজাহানের গ্রেফতারি নিয়ে এই মন্তব্য করেন। সোমবারই তৃণমূল নেতা শাহজাহানকে গ্রেফতারির ব্যাপারে রাজ্য পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছিল হাই কোর্ট। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘স্পষ্ট ভাবে বলছি, পুলিশকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা পুলিশকে বলিনি যে, শাহজাহান গ্রেফতার করা যাবে না।’’
তার পরেই পুরনো নির্দেশ দেখিয়ে তৃণমূল দাবি করতে শুরু করে, আগের রায়ে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছিল আদালত। তাই শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যায়নি। ৭ ফেব্রুয়ারির নির্দেশনামার ৮ নম্বর প্যারার পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাজ্যের মামলায় বুধবার প্রধান বিচারপতি আবারও মন্তব্য করেন, ‘‘আমরা ওই দিন পুলিশকে তদন্ত করতে বারণ করেছিলাম। আমরা কোথাও বলিনি যে নতুন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করা যাবে না। শুধু মাত্র তদন্তের ক্ষেত্রেই নির্দেশ দিয়েছিলাম।’’
এর পরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘অনেকেই বলছেন হাই কোর্ট অভিযুক্তকে (শাহজাহন শেখ) রক্ষা করছে। ৪২টা এফআইআর দায়ের হওয়ার পরেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি, তার দায় পুলিশ ঝেড়ে ফেলতে পারে না।’’
বুধবার রাজ্যের আইনজীবী সওয়াল করার সময় বলেন, ‘‘আমরা যদি তাকে গ্রেফতার করতে পারি তা হলে আমাদের দেখাতে হবে কোন মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হল।’’ রাজ্যের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘তার মানে আপনারা জানেন যে তিনি কোথায় আছেন?’’
শুনানিতে ইডির তরফে সওয়াল করেন ধীরাজ ত্রিবেদী এবং এসভি রাজু। সওয়াল করার সময় বুধবার ইডি আদালতে জানায়, ‘‘পুলিশকে তদন্তভার দেওয়া হলে তথ্য প্রমাণ বিকৃত করবে।’’ তারা আরও দাবি করে, ‘‘রাজ্য পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলে তাঁকে লঘু ধারায় মামলা দেওয়া হতে পারে এবং তাঁর জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।’’
তার পরই ইডির আইনজীবীরা আদালতে বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে যদি পুলিশ গ্রেফতার করে তবে আবার আমাদের রিমান্ডে পেতে অসুবিধা হবে। এই মামলায় সিট গঠনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে পুলিশ সিবিআই সকলেই ছিল। আমরা বলব আদালত সিবিআইকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে দিক। তা হলে তদন্ত ঠিকঠাক হবে।’’ যা শুনে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘শুধু পুলিশ কেন, অবিযুক্তকে সিবিআই, ইডি যে কেউ গ্রেফতার করতে পারে।’’