Asfakulla Naiya

‘রোগীর অভিযোগ ছাড়াই কী ভাবে তদন্ত শুরু’? আসফাকুল্লার মামলায় কেস ডায়েরি তলব হাই কোর্টের

পুলিশের কাছে বিচারপতির প্রশ্ন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া কী ভাবে এই মামলা রুজু করা হল? আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে কোনও রোগী অভিযোগ করেননি, তা হলে তদন্ত শুরু করা হল কী ভাবে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫৬
Share:

আসফাকুল্লা নাইয়ার মামলায় কেস ডাইরি তলব করল হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়ার বিরুদ্ধে যে পদ্ধতিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে, তা নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। পুলিশের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। বিচারপতি জানিয়েছেন, কোনও রোগী আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি, তা হলে কী ভাবে তদন্ত শুরু করল পুলিশ। এই মামলায় কেস ডায়েরিও তলব করেছে হাই কোর্ট। বুধবার আবার এই মামলার শুনানি।

Advertisement

পিজিটি (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি) হয়েও ইএনটি (নাক, কান, গলা) সার্জনের পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারী চিকিৎসক আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে। তাঁকে থানায় তলবও করেছে পুলিশ। এই নিয়ে হাই কোর্টে মামলা দায়েরের অনুমতি চান আসফাকুল্লা। মঙ্গলবার সেই মামলায় আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে এফআইআর করা নিয়ে পুলিশকে তোপ দেগেছে হাই কোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ, এমবিবিএসের বদলে আসফাকুল্লা নিজেকে এমএস ইএনটি হিসাবে তুলে ধরেছেন, এমন প্রমাণ কোথায়? পুলিশের কাছে বিচারপতির প্রশ্ন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া কী ভাবে এই মামলা রুজু করা হল? আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে কোনও রোগী অভিযোগ করেননি, তা হলে তদন্ত শুরু করা হল কী ভাবে? বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, এই এফআইআর ‘অস্পষ্ট’। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, এমবিবিএস পাশ করেছেন বলে আসফাকুল্লা প্র্যাকটিস করতেই পারেন।

এই মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘মামলাকারী রোগী নন। যে-ই কেউ থানায় গেলেন, আপনারা সত্বর কেস শুরু করে দিলেন? অনেক ক্ষেত্রে তো জিডি করে ফেলে রাখেন!’’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘তদন্ত যে ভাবে হয়েছে, তাতে আমি হতাশ। কারণ এফআইআর রুজু হতে ন্যূনতম তথ্যের প্রয়োজন।’’

Advertisement

গত বুধবার আসফাকুল্লাকে শোকজ় করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। পিজিটি (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি) হয়েও ইএনটি সার্জনের পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে আসফাকুল্লাকে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর কাকদ্বীপের বাড়িতে হানা দেয় বিধাননগরের পুলিশ। সোমবার আসফাকুল্লাকে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় ডেকে পাঠানো হয়। তার পরেই তিনি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।

আসফাকুল্লার আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য মঙ্গলবার শুনানিতে সওয়াল করে জানিয়েছেন, আরজি কর আন্দোলনের প্রতিবাদী মুখ ছিলেন তাঁর মক্কেল। তাঁর বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা করার অভিযোগ কেউ করেননি। তার পরেও তাঁর বাড়িতে তল্লাশি করা হয়। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করে আইনজীবী শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আসফাকুল্লার অতিরিক্ত কোয়ালিফিকেশন সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই। এমএস পাশ করার আগেই নিজেকে ইএনটি সার্জন বলে পরিচয় দেন। বেসরকারি হাসপাতালেও রোগী দেখতেন তিনি। এর পরেই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আসফাকুল্লার বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরে উদ্ধার হওয়া জিনিসের তালিকা অর্থাৎ ‘সিজ়ার লিস্ট’ কি কিছু রয়েছে? সেখানে দেখতে হবে যে, তিনি তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কী লিখেছেন? রোগীদের সেই বিষয়ে কী জানিয়েছেন? এর পরে প্রেসক্রিপশন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। এ-ও জানিয়েছেন, কোনও রোগী অভিযোগ করেননি, অথচ কী ভাবে মামলা রুজু করা হল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement