সোমবার হাই কোর্টের নির্দেশ, ওই অংশের নির্মাণ ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব হেরিটেজ বিভাগের। — ফাইল ছবি।
জোড়াসাঁকোয় রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে তৃণমূল সমর্থিত সমিতির অফিস ভাঙার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অংশের নির্মাণও ভাঙতে হবে। সোমবার এই নির্দেশ কার্যকর করতে কলকাতা পুরসভাকে তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছে উচ্চ আদালত। মামলার পরের শুনানি ১৯ ডিসেম্বর ।
সোমবার হাই কোর্টের নির্দেশ, ওই অংশের নির্মাণ ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব হেরিটেজ বিভাগের। পুনরুদ্ধারের পর হেরিটেজ ভবন বলে আলাদা করে চিহ্নিত করতে হবে ওই জায়গাকে। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘হেরিটেজ ভবন না হলেও, যে কেউ গিয়ে যে কোনও জায়গায় পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলতে পারে?’’
জোড়াসাঁকোয় হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া ভবনের অব্যবহৃত ঘর ভেঙে নির্মাণ কাজ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন স্বদেশ মজুমদার নামে এক ব্যক্তি। মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তীর অভিযোগ, জোড়াসাঁকো ভবন ‘গ্রেড ওয়ান হেরিটেজ’। সেই ভবনেরই দু’টি ঘর ভেঙে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
মামলাকারীর দাবি, যে ঘরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম বার সাক্ষাৎ হয়েছিল, সেখানে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের ‘শিক্ষাবন্ধু সমিতি’ নামে একটি সংগঠনের কার্যালয় তৈরি হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ছবি খুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি টাঙানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।
এই মামলার শুনানি ছিল ৭ নভেম্বর। সে দিন কলকাতা হাই কোর্ট জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসের হেরিটেজ ভবন ভাঙার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, তাদের নির্দেশের পরেও ভবন ভাঙার কাজ হলে জবাব দিতে হবে রাজ্যকে। রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থানে সমস্ত রকম নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখারও নির্দেশ দিয়েছিল বেঞ্চ। এই নিয়ে রাজ্যকে হলফনামার আকারে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল হাই কোর্ট। সোমবার সেই ভবনে পার্টি অফিস ভাঙার নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।