—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বেশি মুনাফার লোভে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী হিমঘরে আলু আটকে রাখায় দাম বাড়ছে বাজারে— মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলু ব্যবসায়ীরা সে কথা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, আবহাওয়ার কারণে গত মরসুমে আলুর ফলন কিছুটা কম ছিল। ফলে, হিমঘরে মজুতই হয়েছে কম। তা ছাড়া, আনাজের চড়া দরের কারণেও আলুর চাহিদা বাড়ছে। এ সবের ফলেই আলুর দাম কিছুটা বেশি বলে দাবি আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের। তবে ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে, খুচরো বাজারে যা দাম রয়েছে, তা একটু কমানো সম্ভব।
ভোটের আগে খুচরো বাজারে প্রতি কিলোগ্রাম জ্যোতি আলুর দাম ছিল ২৭-২৮ টাকা। ভোট-পর্ব মেটার পরে তা ৩৫ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, এ বার মাঠ থেকে আলু হিমঘরে ওঠার সময়েই বাজারে দাম ছিল ১৬-১৭ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম। হিমঘর বন্ধের পরে তা বেড়ে হয় ২২ টাকা। হিমঘরের ভাড়া-সহ প্রতি কিলোগ্রামে আনুষঙ্গিক খরচ রয়েছে ৬-৭ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, আলুর দাম বাড়তে থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ দিন আগে, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহেই হিমঘর খোলা হয়। তার পরেও পাইকারি বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এখন হিমঘর থেকেই আলু মিলছে ২৬-২৮ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে। তার পরে তা বড় আড়তদার, স্থানীয় আড়তদার হয়ে বাজারের খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছচ্ছে। সেখানে ছোট-মাঝারি, খারাপ মানের আলু বাছাইয়ের পরে বিক্রি হচ্ছে। সব মিলিয়ে, দাম বাড়ছে। কলকাতার কোলে মার্কেটের এক খুচরো ব্যবসায়ীর কথায়, “হুগলি-বর্ধমান থেকে বাছাই আলু নিয়ে আসছি। ভাল আলুর দাম একটু বেশি পড়ে যাচ্ছে।”
হিমঘর সংগঠন সূত্রের খবর, গত বছর রাজ্যে ৬৭ লক্ষ টন আলু হিমঘরে মজুত হয়েছিল। এ বার তা কমে হয়েছে ৬২.৭৫ টন। ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সংগঠন’ সূত্রের দাবি, অন্য বছরের তুলনায় এ বার অন্তত ১-২% বেশি আলু হিমঘর থেকে বেরোচ্ছে। ওই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি জগবন্ধু মণ্ডলের বক্তব্য, “দেশের মধ্যে এ রাজ্যে আলুর দাম সবচেয়ে কম।” সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “পাইকারি বাজারে দাম ঠিকই আছে। খুচরো বাজারে দাম বেশি হলে নজর দেওয়া দরকার।”
হিমঘর মালিক সমিতির রাজ্য সভাপতি বরেণ মণ্ডল বলেন, “আমরা সরকারকে সব রকম সাহায্য করতে তৈরি। সরকার যদি মনে করে আলু আটকে রাখার প্রবণতা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে পারে।”