গরমে কর্মীদের অভাবে দেওয়া যাচ্ছে না পরিষেবা। বাবুঘাটে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাসের সারি। নিজস্ব ছবি।
প্রতি দিন লাফিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রার সূচক। দাবদাহের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জনজীবনেও। সেই আবহেই সমস্যার মুখে পড়েছে বেসরকারি পরিবহণ পরিষেবা। বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি থেকে জানা যাচ্ছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেসরকারি বাস পরিষেবা দেওয়ার জন্য যে ন্যূনতম কর্মীর প্রয়োজন রয়েছে, তা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। একটি বাস চালাতে ন্যূনতম দু’জন কর্মীর প্রয়োজন হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আরও এক জন অতিরিক্ত পরিবহণ কর্মীকেও কাজে লাগানো হয়।
প্রতিটি বাসে গাড়ির চালক ছাড়াও থাকেন এক জন কন্ডাক্টর। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাঁদের সঙ্গেই থাকেন এক জন ‘হেল্পার’। কিন্তু প্রবল গরমে এই পরিবহণ কর্মীরা কাজে যেতে চাইছেন না। তাই বেসরকারি বাস পরিষেবা দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বাসমালিকেরা। কলকাতা শহর ও শহরতলি জুড়ে প্রতি দিন প্রায় আট হাজার বেসরকারি বাস পরিষেবা দিয়ে থাকে। এই পরিষেবা দিতে কমপক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ১৬-২০ হাজার কর্মী কাজ করেন। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ কর্মী বাইরের রাজ্য থেকে আসেন। অত্যধিক গরমের পূর্বাভাস পেয়ে সেই পরিযায়ী কর্মীদের বড় অংশ নিজেদের রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে গরমের কারণে অন্য পরিবহণ কর্মীরা একটানা কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কেউ বা দু’এক বার গাড়ি চালিয়ে আর কাজ করার শক্তি পাচ্ছেন না। এমতাবস্থায় বেসরকারি বাস পরিষেবা চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘আমরা কী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, বলে বোঝাতে পারব না! কোনও ক্ষেত্রে কর্মীদের অপ্রতুলতা, কোনও ক্ষেত্রে আবার পরিষেবা দিতে গিয়ে তাঁদের অসুস্থ হয়ে পড়া। সব ক্ষেত্রেই পরিষেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে যে ভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে, তাতে আমরা কর্মীদের কাজের কথা বলতেও পারছি না। কারণ, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিও আমাদের রেখে চলতে হবে। তবে একটা কথা বলতে পারি, গরমের কারণে বেলা বাড়তেই যে ভাবে রোদের প্রকোপ বাড়ছে, তাতে বাসে যাত্রীসংখ্যাও খুব বেশি হচ্ছে না।’’