রাজভবন অভিযানে বিএসএনএল ঠিকাকর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
গত তিন বছর ধরে কর্মহীন। দিন কাটছে চরম অর্থকষ্টে। ইতিমধ্যেই কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন আত্মহননের পথ। এ বার ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে রাজভবন পর্যন্ত মিছিল করলেন বিএসএনএল ঠিকাকর্মীরা।
নিজেদের দুর্দশার কথা জনসমক্ষে তুলে ধরতে বুধবার রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন বিএসএনএলের ঠিকা শ্রমিকেরা। দুপুর ১২টায় কলকাতা টেলিফোন ভবনের গেট থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিলে পা মেলান বহু ঠিকা শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার। রাজভবন পর্যন্ত মিছিল করে গিয়ে রাজ্যপালের প্রতিনিধি এক সচিব পর্যায়ের আধিকারিকের হাতে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তাঁরা।
শ্রমিকেরা জানাচ্ছেন, গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে আসার পর তিন বছর আগে তাঁদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় চরম দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে তাঁদের পরিবার। এই মধ্যবয়সে এসে হাতে বিকল্প কাজও নেই। ইতি মধ্যেই অবসাদে আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন ১৩ জন শ্রমিক।
বহু বছর ধরে ল্যান্ডলাইন কিংবা ব্রডব্যান্ড পরিষেবায় একচেটিয়া আধিপত্য ছিল বিএসএনএল-এর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতা টেলিফোন্স বিএসএনএল-এর ঠিকা শ্রমিকদের এক যোগে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। কর্মচ্যুত হন প্রায় চার হাজার কর্মী। এর আগে অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের খাতে ৪১৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা এসেছিল। কিন্তু এই টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, যে আধিকারিকেরা এই ঘটনায় যু্ক্ত ছিলেন, তাঁরাই নিজেদের চাকরি বাঁচাতে প্রতিষ্ঠিত ইউনিয়নগুলির সঙ্গে সমঝোতা করে চাকরি থেকে ছাঁটাই করিয়েছেন এই অস্থায়ী ঠিকা শ্রমিকদের। সেই থেকে গত তিন-চার বছর ধরে বেকার বসে রয়েছেন শ্রমিকেরা।
কন্ট্রাক্টরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন অফ বিএসএনএল-এর (কলকাতা টেলিফোন্স) সভাপতি অমিতাভ ভট্টাচার্য জানালেন, ‘‘লেবার ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি আমরা রাজ্যপাল মারফৎ কেন্দ্রীয় সরকারকেও নিজেদের দুরবস্থার কথা জানাতে চাই। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতেও যাব। আমরা ন্যায় বিচার চাই।’’ ঠিকাশ্রমিকদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে বুধবার মিছিলে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি হিসাবে হেঁটেছেন সাবিৎ খান। সাবিৎ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার।