বিধানসভা-লোকসভাতেও চর্চায় ‘কাটমানি’, বখরা-বিক্ষোভ নিয়ে মমতাকে আক্রমণ দিলীপের

দলের কর্মীদের তোলাবাজি ও কাটমানির (বখরা) টাকা ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই টাকা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০১:১৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাজ্যে বিধানসভার অধিবেশন ফের উত্তাল হল ‘কাটমানি’-বিতর্কে। সেই সঙ্গে বিতর্কের আঁচ এ বার গিয়ে পড়ল লোকসভাতেও। দুই সভাতেই বিরোধী আক্রমণের নিশানায় তৃণমূল।

Advertisement

দলের কর্মীদের তোলাবাজি ও কাটমানির (বখরা) টাকা ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই টাকা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। বিধানসভায় বিরোধীরাও বিষয়টিকে হাতিয়ার করেছে। সেই সূত্রেই মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বখরা-কাণ্ডে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে কমিশন গঠন এবং শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলেছেন। মান্নানের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী প্রকৃতই দুর্নীতি নিরসনে তৎপর হলে দ্রুত এ ব্যাপারে কমিশন গঠন করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। যত দিন তা না করা হবে, তত দিন অধিবেশন চালানো সম্ভব নয়।’’ পরে বিধানসভার অলিন্দে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে দুর্নীতি ধরতে ওয়াংচু কমিশন হয়েছিল। দুই মন্ত্রী বরখাস্তও হয়েছিলেন।

বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের পরেই হইচই শুরু করেন শাসক দলের বিধায়কেরা। বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা প্রতিবাদ করায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এ ভাবে হুমকি দেওয়া যায় না।’’ মান্নান তখন কিছু বলতে চাইলেও তাঁকে বলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তুমুল হট্টগোলে কক্ষত্যাগ করেন কংগ্রেস এবং বাম বিধায়কেরা। বিরোধী দুই দল কক্ষত্যাগ করলেও বিজেপি তাতে সামিল হয়নি। গেরুয়া শিবিরের ৬ বিধায়ক অল্প কিছুক্ষণ আলাদা ভাবে তৃণমূল-বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। তবে আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি অভিযান করতে পারে তারা। বিধানসভায় আজ, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের ভাষণের উপরে জবাবি বক্তৃতায় বখরা-প্রসঙ্গে কী বলেন, সে দিকে নজর রাখছে বিরোধী শিবির। বাম ও কংগ্রেস যেমন ওই বিষয়ে বেসরকারি প্রস্তাব আনতে চায়, বিজেপি তেমন আজই মুলতুবি প্রস্তাব আনতে পারে।

Advertisement

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিনই লোকসভায় বাংলার বখরা-বিক্ষোভের প্রসঙ্গ তুলে দিয়েছেন। সরাসরি মমতাকে আক্রমণ শানিয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘৮ বছর সরকার চালানোর পরে কাটমানি ফেরত পাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আলাদা আইন বানানোর কথা বলেছেন। যারা কাটমানি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন, সেই সব সুবিধাভোগীরা শাসক দলের নেতাদের বাড়ির সামনে টাকা ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন।’’

পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বিরোধীদের কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘মাটি-জমি-ট্রেজারি ইত্যাদি কেলেঙ্কারির পরে আমরাও শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করেছিলাম। হয়েছিল কি?’’ তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাল উদ্যোগকে বিকৃত করা হচ্ছে।’’ সন্ধ্যায় নবান্নে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মহৎ উদ্দেশ্যে কাটমানির কথা বলেছিলেন। কিন্তু বিরোধীরা এবং সংবাদমাধ্যমের একাংশ এটা নিয়ে অপপ্রচার করছে।’’

পার্থবাবুর আগের দিনের বিবৃতির সূত্র ধরে বিরোধী দলের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘তৃণমূল তো বলেছে, তাদের কর্মীদের ৯৯.৯৯% সৎ। তা হলে মাত্র ০.১% অসৎকে চিহ্নিত করতে পারছেন না কেন?’’ কংগ্রেসেরই সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাটমানির টাকা খেল কে? ভাইপো ছাড়া আবার কে?’’ একের পর এক প্রকল্পে সরকার পক্ষ ‘তোলা’ তুলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাল উদ্যোগকে বিকৃত করা হচ্ছে।’’ সন্ধ্যায় নবান্নে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মহৎ উদ্দেশ্যে কাটমানির কথা বলেছিলেন। কিন্তু বিরোধীরা এবং সংবাদমাধ্যমের একাংশ এটা নিয়ে অপপ্রচার করছে।’’
পার্থবাবুর আগের দিনের বিবৃতির সূত্র ধরে বিরোধী দলের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘তৃণমূল তো বলেছে, তাদের কর্মীদের ৯৯.৯৯% সৎ। তা হলে মাত্র ০.১% অসৎকে চিহ্নিত করতে পারছেন না কেন?’’ কংগ্রেসেরই সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাটমানির টাকা খেল কে? ভাইপো ছাড়া আবার কে?’’ একের পর এক প্রকল্পে সরকার পক্ষ ‘তোলা’ তুলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement