ফাইল চিত্র।
গত বছর স্বাধীনতা দিবসে নিজের ভাষণে ১৪ অগস্টকে ‘দেশভাগের ভয়াবহতা স্মরণ দিবস’ পালনের ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এ বার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালনের অঙ্গ হিসেবে দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশভাগের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের ছিন্নমূল হয়ে পড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে। প্রদর্শনী তৈরিই আছে। সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজকে তা দেখাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার পুরো বিষয়টিরই বিরোধিতা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
এই প্রদর্শনী তৈরি করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব হিস্টোরিক্যাল রিসার্চ এবং ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য আর্টস। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ জায়গায় ১০ থেকে ১৪ অগস্ট এই প্রদর্শনীর আয়োজন করতে বলেছে ইউজিসি। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, এই প্রদর্শনীর ইংরেজি ও হিন্দি ডিজিটাল সংস্করণ দেখানোরও ব্যবস্থা করতে হবে।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘এই ভাবে দাঙ্গার স্মৃতিকে মনে করাতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। দাঙ্গা হয়েছিল সেই সময় মূলত বঙ্গদেশ এবং পঞ্জাবে। যেখানে এখন বিজেপি সরকার নেই। আমি মনে করি, এই উদ্যোগ সাম্প্রদায়িকতায় উস্কানি দেওয়ার উদ্যোগ। কোনও সম্প্রদায়কে এই ভাবে পৃথক করে দায়ী করা চলে না। এই উদ্যোগের পিছনে নির্দিষ্ট ভাবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি রয়েছে।’’
ইতিহাসবিদ এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের বক্তব্য, এ দেশের স্বাধীনতা নিয়ে কোনও রকম আলোচনা করতে গেলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভয়াবহতা ও দেশভাগের যন্ত্রণার কথা উঠে আসবে— সেটা ঐতিহাসিক সত্য। তবে এই নিয়ে আলোচনা সব সময়েই প্রকৃত ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে হওয়া উচিত এবং ইতিহাসের ঠিক তথ্যের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের প্রশ্ন, তা হলে কি বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী দেশভাগ সমর্থন করছেন? তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টি ও কংগ্রেসের ন্যক্কারজনক ভূমিকাকে তিনি কি ধামাচাপা দিতে চাইছেন? ‘‘ইতিহাসের সব চেয়ে অভিশপ্ত ঘটনা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের জানা উচিত। সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েই সমাজ-সভ্যতার অগ্রগতি ঘটবে। নইলে আবার সেই অন্ধকারতম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে,’’ বলেন শমীক।