অমরনাথ মাইতি। নিজস্ব চিত্র।
আড়াই বছরে দ্বিতীয় বার। ২০১৯ সালে মেট্রো রেলে কাজের জন্য বৌবাজারে ধস নেমে দু’টি দোকান বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও হাল ছাড়েননি অমরনাথ মাইতি। এ বার বন্ধ হল তাঁর বৌ বাজারের তৃতীয় দোকানটিও।
বুধবার সন্ধ্যায় যখন বৌবাজারে দুর্গা পিতুরি লেনে একের পর এক বাড়িতে ফাটল ধরা পড়তে শুরু করেছে, তখনই পুলিশ তাঁকে জানিয়ে দেয়, ওই এলাকায় দোকান খোলা তো দূর অস্ত্, দোকানের ভিতরে রাখা জিনিসপত্র আনতেও বিধিনিষেধ মানতে হবে।
অমরনাথ জানিয়েছেন, এক-একটি বাড়িতে ১০টিরও বেশি দোকান রয়েছে। তাঁর দোকানটি যে বাড়ির ভিতরে, সেখানে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১২টি দোকান। সুরক্ষার কথা ভেবে এই বাড়িগুলিতে আপাতত দু’জন করে ঢুকতে পারবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ফলে ১২টি দোকানের কর্মচারীদের প্রত্যেককে ক্রমান্বয়ে ভিতরে ঢোকার সুযোগ দিলে তাঁর প্রবেশানুমতি পেতে বহু সময় লেগে যাবে। তার আগে আপাতত ঘরছাড়া তিনি।
অমরনাথের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে। বৌবাজারের ১৭ নম্বর দুর্গা পিতুরি লেনে সোনার গয়নার দোকান দোকান তাঁর। ভাড়ার দোকান। তবে সেখানেই থাকতেনও অমরনাথ। দেকান বন্ধ হওয়ায় আপাতত মাথার ছাদও আর নেই তাঁর।
ঘটনাচক্রে, ২০১৯ সালের অগস্টে মেট্রোরেলের কাজের জন্য বৌবাজারের এই চত্বরেই ধস নেমেছিল। তখনও অমরনাথের দু’টি দোকান ছিল দুর্গা পিতুরিতেই। একটির ঠিকানা, ২/২ দুর্গা পিতুরি লেন। অন্যটির ১৪/১এ দুর্গা পিতুরি লেন। সোনার দোকানী জানিয়েছেন, তখন ১৫ দিন দোকানে ঢুকতে পারেননি তিনি। এখন পুলিশ অত কড়াকড়ি না করলেও দোকানে ঢুকতে এমনিই ভয় লাগছে তাঁর। অমরনাথ বলেছেন, ‘‘জিনিস তো আনতেই হবে। অথচ ভিতরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। মোবাইলের আলো জ্বেলে ঢুকতে হচ্ছে। যে কোনও মুহূর্তে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। তবু যেতে হবে।’’
কিন্তু এ বারও সমস্যা মিটলে কি পুরনো দোকানে ফিরবেন? এ প্রশ্নের জবাব অবশ্য দিতে পারেননি অমরনাথ।