ধসের ভয় অন্য দিকেও, সরানো হল বাসিন্দাদের

কেএমআরসিএল সূত্রের খবর, দুর্গা পিতুরি লেন বা সেকরাপাড়ার দিকে মাটিতে ধস নামার প্রবণতা অনেকটা কমলেও বৌবাজারের দিকে ধস নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১২
Share:

বাসা-বদল গৌর দে লেনের এক বাসিন্দার। নিজস্ব চিত্র

ধস ঠেকাতে বুধবার রাতেই মুখবন্ধ সুড়ঙ্গে জল ভরার কাজ সম্পূর্ণ করেছিলেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তার জেরে, বৃহস্পতিবার সারা দিনে বৌবাজার অঞ্চলে নতুন করে কোনও বাড়ি ভাঙার ঘটনা ঘটেনি। তবে ধস নামা পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে, সেটাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন বা কেএমআরসিএলের আধিকারিকেরা। সুড়ঙ্গের পরিসরের মধ্যে বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত ৪৮টি বাড়ির বাসিন্দাদের আগেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ দিন আরও ২০টি বাড়ির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

কেএমআরসিএল সূত্রের খবর, দুর্গা পিতুরি লেন বা সেকরাপাড়ার দিকে মাটিতে ধস নামার প্রবণতা অনেকটা কমলেও বৌবাজারের দিকে ধস নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ওই অংশের মাটিতে কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তাই রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী তাপস রায়ের পরিবার-সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উপরে কড়া নজর রাখছেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ।

বিপর্যয় সামাল দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সুড়ঙ্গ-বিশেষজ্ঞ পল ভেরল, সিঙ্গাপুরের সুড়ঙ্গবিদ ব্রিজ ক্রিস্টোফার এবং জন এন্ডিকট ছাড়াও মুম্বই ও চেন্নাই থেকে আসা দুই ভূতত্ত্ববিদ মণীশ কুমার ও কুমার পিচ্ছুমণি আগেই কাজে নেমেছিলেন। এ দিন তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন রাশিয়ার গ্রাউট বিশেষজ্ঞ কিরিল শ্রামকো। ঘটনাস্থলে উপর থেকে সিমেন্ট, জল এবং বেন্টোনাইট-সহ বিভিন্ন রাসায়নিকের মিশ্রণ ঢালা হচ্ছে। ওই প্রক্রিয়ার কার্যকারিতার অনেকটাই নির্ভর করছে মাটির কিছুটা স্থিতাবস্থায় আসার উপরে। আপাতত পুরো স্থিতাবস্থা ফিরতে সপ্তাহখানেক লাগাতে পারে বলে মেট্রোর আধিকারিকদের একাংশের ধারণা।

Advertisement

সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে যাঁদের বাড়িছাড়া হতে হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এ দিনই কেএমআরসিএলের বোর্ড মিটিংয়ে অনুমোদিত হয়। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মানস সরকার জানান, যে-সব পরিবারকে সরানো হয়েছে, তাদের এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পোদ্দার কোর্টের কাছে সংস্থার বাড়ি সংস্কার করে বৌবাজারের বাসিন্দাদের একাংশের সাময়িক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে হতে পারে।

বৌবাজারের পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন নবান্নে বৈঠক করেন মেট্রো সংক্রান্ত কোর কমিটির সদস্যেরা। সেই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বাড়িছাড়া বাসিন্দাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবেন স্থানীয় কাউন্সিলর এবং থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক। প্রয়োজনীয় নথি তৈরির ক্ষেত্রে তাঁরাই স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য করবেন। ইস্ট-ওয়ে‌স্ট মেট্রোর কাছ থেকে মাটির স্থিতাবস্থা ফিরে আসার রিপোর্ট পাওয়ার পরে পুরসভা ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে হাত দেবে বলে নবান্নে জানান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে বিপজ্জনক বাড়ির স্বাস্থ্যপরীক্ষা, ধ্বংসস্তূপ সরানো— সবই আপাতত নির্ভর করছে সুড়ঙ্গের উপরের মাটির স্থিতাবস্থা ফিরে আসার উপরে।

এপিডিআরের প্রতিনিধিরা এ দিন বৌবাজারে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement