শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগলেন বিশ্বজিৎ দাস (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র
‘ঘর ওয়াপসি’র সম্ভাবনা আরও জোরদার করে দলেরই সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিজেপি-তে যাওয়া বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে অভিযোগ তুললেন, ঠাকুর পরিবারের সদস্য শান্তনু বিজেপি-কে ব্ল্যাকমেল করছেন। রাজনীতি করছেন মতুয়াদের নিয়ে। পাল্টা বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুললেন শান্তনুও।
বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের সম্মেলনে যোগ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিশ্বজিৎকে। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, মঞ্চে ওঠার সময় তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। তার পরেই শুক্রবার নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দল এবং শান্তনুর বিরুদ্ধে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্বজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁরাই নাগরিক। শান্তনু ঠাকুর মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করছেন। দলকে ব্ল্যাকমেল করছেন। নিজের স্বার্থ ছাড়া মতুয়াদের কথা ভাবছেন না।’’
অমিত ঠাকুরনগরের মঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘করোনার টিকা প্রক্রিয়া শেষ হলে তার পর সিএএ কার্যকর করা হবে।’’ সেই প্রসঙ্গ টেনে বিশ্বজিতের তোপ, ‘‘টিকাকরণ শেষ হতে ৫ বছর লাগবে। তা হলে মতুয়ারা কি সেই ৫ বছর পর নাগরিকত্ব পাবেন? এর উত্তর দেবেন শান্তনু ঠাকুর!’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে বরাবর প্রতিবাদ করে এসেছি। গত ২৩ বছর ধরে আমি জনপ্রতিনিধি। তৃণমূলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে দল ছেড়েছি।’’
যাঁর বিরুদ্ধে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ সেই শান্তনু যদিও বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে বলার জন্য বিশ্বজিৎকে কেউ প্রভাবিত করছেন। কারা প্রভাবিত করছেন, উনি সেটা আগে বলুন।’’ অমিতের সিএএ আশ্বাস নিয়ে শান্তনুর বক্তব্য, ‘‘সিএএ আমি আনিনি। এনেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সুতরাং এই নিয়ে কিছু বলার অর্থ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই অপমান করা।’’
বছর দেড়েক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হওয়ায় বিশ্বজিৎ দাবি করেন, বিধায়ক তহবিলের টাকা নিয়ে কথা বলেছেন। ওই ঘটনার পরে রাজ্য সরকার তাঁকে জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দিতে চেয়েছিল। যদিও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তার পর শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় আবারও তাঁর তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনা জোরদার হল।