গঙ্গা থেকে দেহ মেলেনি খুন হওয়া মেয়ের

মহেন্দ্রটোলা খুবই প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাম। এলাকায় বিদ্যুৎ এলেও সাক্ষরতার হার কম। গ্রামের ভিতরের রাস্তাও কাঁচা। তবে বিদ্যুৎ রয়েছে। ধীরেন দিনমজুরের কাজ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৬
Share:

প্রতিমা মণ্ডল।

এক আত্মীয়ের প্রেমে পড়েছে বলে কিশোরী কন্যাকে খুন করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মালদহের ভূতনির মহেন্দ্রটোলা গ্রামের ধীরেন মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী সুমতি মণ্ডলের বিরুদ্ধে। ঘটনার পরে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও তাঁদের মেয়ে প্রতিমার (১৬) দেহ পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশের দাবি, ধীরেন ও তাঁর স্ত্রী পরিবারের সম্মানরক্ষার জন্য মেয়েকে খুন করার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। সে কারণেই গ্রেফতার করে তাঁদের বিরুদ্ধে খুন ও প্রমাণ লোপাটের ধারা দেওয়া হয়েছে। ধীরেন ও সুমতিকে চার দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মহেন্দ্রটোলা খুবই প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাম। এলাকায় বিদ্যুৎ এলেও সাক্ষরতার হার কম। গ্রামের ভিতরের রাস্তাও কাঁচা। তবে বিদ্যুৎ রয়েছে। ধীরেন দিনমজুরের কাজ করেন। একটাই ঘরে থাকতেন তিন জন। তাঁর বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। প্রতিমা পড়ত নবম শ্রেণিতে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার এক সম্পর্কিত দিদির দেওরের। তাঁদের বাড়ি স্থানীয় ছবিলালটোলায়। সে কথা বাড়িতে জানাজানি হয়ে যাওয়ায় তা নিয়ে বাড়িতে গন্ডগোলও হয়েছিল। তার পর থেকেই প্রতিমা নিখোঁজ।

পুলিশের দাবি, গলা টিপে প্রতিমাকে খুন করে তার দেহ একটি চটের ব্যাগে ভরা হয়। ব্যাগে ঢোকানো হয় বড় বড় পাথর। শনিবার সকালে সেই বস্তা সাইকেলে করে নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গা ঘাটে। নৌকায় করে মাঝ নদীতে গিয়ে সেই দেহ গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনাটি দেখে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে বাড়ি থেকে ধীরেনবাবুদের গ্রেফতার করে।

Advertisement

এই সাইকেলে করেই প্রতিমার দেহ ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকার কয়েক জনের অবশ্য বক্তব্য, ধীরেনবাবু এমনিতে শান্ত লোক বলেই পরিচিত। মেয়ে এক আত্মীয়কে বিয়ে করতে চায় বলে রাগের চোটে তাকে একেবারে খুন করে ফেলতে পারেন, তা বিশ্বাস করা শক্ত। কারও মত, বাড়িতে গন্ডগোলের পরে প্রতিমা আত্মহত্যা করেছে। তবে একটি মাত্র ঘরে তা-ও বা কী করে সম্ভব, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে আমরা বুঝতে পারছি না। দেহ উদ্ধার হলে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সামনে আসতে পারে।’’ জেলার পুলিশ সুপার অলক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ওই মেয়েটির বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে তাকে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement