নিজস্ব চিত্র।
কথা ছিল, হবে নবান্ন অভিযান হবে। যাবে তিনটি মিছিল। পুলিশ যখন নবান্নমুখী বিজেপির মিছিল আটকাতে ব্যস্ত, তখন বিজেপির চতুর্থ একটি মিছিল পৌঁছে গেল কলকাতা পুলিশের সদর দফতরের কাছে। পুলিশ অবশ্য লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গ্রেফতার হন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা। যদিও বিজেপি নেতাদের দাবি, তাঁদের ‘লালবাজার কৌশল’ ধরতেই পারেনি পুলিশ। এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা লালবাজারের প্রধান ফটক পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলাম। পুলিশ সেটা আগে থেকে আন্দাজ করতে পারেনি। তারা প্রস্তুতও ছিল না। আমরা যে নবান্ন অভিযানে নেমে লালবাজার অভিযানও করব সেটা তারা বুঝতে পারেনি।’’
ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ২টো পেরিয়েছে। সাঁতরাগাছিতে বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের শেল, জলকামান ব্যবহার করছে পুলিশ। হাওড়া ব্রিজের উপর দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বাধীন মিছিলও আটকে গিয়েছে। বাধা পেয়ে হাওড়া ময়দানে রাস্তায় বসে পড়েছেন সুকান্ত মজুমদার। এমন সময় চতুর্থ একটি মিছিল বের হয় বিজেপির রাজ্য সদর দফতর থেকে। নেতৃত্বে জগন্নাথ। মুরলীধর সেন লেন থেকে বেরিয়ে সেই মিছিল সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে এগোতে থাকে। তখন অনেকেরই প্রশ্ন, সব মিছিল আটকে যাওয়ায় কি চতুর্থ মিছিল এগোবে নবান্নের পথে?
কিছু ক্ষণ পর জানা যায়, বিজেপির চতুর্থ মিছিলটি চলেছে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর, লালবাজার। বিজেপির অভিযানের কারণে হাওড়া এবং গোটা কলকাতা পুলিশে ছয়লাপ থাকলেও লালবাজারের নিরাপত্তা তুলনায় ঢিলেঢালা ছিল বলে দাবি বিজেপি নেতাদের একাংশের। তারই সুযোগ নিয়ে জগন্নাথের নেতৃত্বে বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা পৌঁছে যান একেবারে লালবাজারের দোরগোড়ায়।
এই সময়ই খবর পাওয়া যায়, রবীন্দ্র সরণি ও এমজি রোডের সংযোগস্থলের কাছে পুলিশের গাড়িতে আগুন। সেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে লালবাজার অভিমুখে যাওয়া চতুর্থ মিছিলেও। যদিও ভিতরে ঢুকতে পারেননি তাঁরা। পুলিশ লাঠি চালিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গ্রেফতার করা হয় জগন্নাথ, দীপাঞ্জন গুহ-সহ অন্যান্য নেতাকে।
তাঁদের এই কৌশল পুলিশ বুঝতে পারেনি বলে জগন্নাথ বলেন, ‘‘নবান্ন বাঁচাতে যখন পুলিশ ব্যস্ত। তখন কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে গিয়ে আমরা শক্তি দেখিয়ে দিলাম।’’
পুলিশের বাধা পেয়ে মিছিলটি আবার উল্টো পথে আসতে শুরু করে। বিজেপি সদর দফতরের কাছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের উপর শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানেও চলে আসে পুলিশ। লাঠিচার্জ করে মুরলীধর সেন লেনের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বিজেপি কর্মীদের।