JP Nadda

দিল্লির স্তুতি আর বাংলার দুর্নীতি, লোকসভা ভোটে দলীয় প্রচারের সুর বেঁধে দিলেন নড্ডা

বিজেপির ‘জনসম্পর্ক সভা’য় বক্তব্য রাখতে উঠে নড্ডা মোদী সরকারের নানা সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি রাজ্যে তৃণমূল সরকারের ‘দুর্নীতি’, ‘গাজোয়ারি’ নিয়েও সরব হন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেথুয়াডহরি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩১
Share:

লোকসভা ভোটে দলীয় প্রচারের সুর বেঁধে দিলেন নড্ডা। ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের গুণগান এবং রাজ্য সরকারের সমালোচনা, এই দুই কৌশলে ভর করেই রাজ্যে প্রচার শুরু করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। বৃহস্পতিবার নদিয়ার বেথুয়াডহরিতে বিজেপির ‘জনসম্পর্ক সভা’য় বক্তব্য রাখতে উঠে নড্ডা মোদী সরকারের নানা সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি রাজ্যে তৃণমূল সরকারের ‘দুর্নীতি’, ‘গাজোয়ারি’ নিয়েও সরব হন তিনি। কেন্দ্র সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের জন্য নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিলেও রাজ্যে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ সরকার থাকার জন্য সেগুলোর সফল রূপায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

Advertisement

নড্ডার আগে বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তৃণমূল বিরোধিতার সুর মূলত তাঁরাই বেঁধে দেন। দু’জনের কথাতেই উঠে আসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ, মিড ডে মিল কিংবা আবাস যোজনার মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের প্রসঙ্গ। নড্ডা শুভেন্দু-সুকান্তদের সুরেই রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করে বলেন, “তৃণমূল সিমেন্ট, বালি, কয়লা, গরু, কিছুই ছাড়ছে না। সব বিষয়েই ওরা দুর্নীতি করছে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তিনি বলেন, “দিদি আপনি বাংলার কী হাল করেছেন! ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেও এখন দুর্নীতি হচ্ছে।”

Advertisement

নড্ডার কথায় উঠে এসেছে কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস ঘেরাওয়ের প্রসঙ্গও। তাঁর অভিযোগ, শুভেন্দুকে সুরক্ষাকবচ দেওয়ায় তৃণমূল বিচারপতির এজলাস ঘেরাও করেছে। তারপরই তিনি দাবি করেন, বিচারবিভাগকে ভয় পাইয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। আয়ুষ্মান ভারতের মতো কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলিকে রাজ্য চালু করতে দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই অভিযোগ করেন, কেন্দ্র টাকা না পাঠানোয় রাজ্য সরকারের অনেক জনমুখী প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসক তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে নড্ডা বলেন, “কেন্দ্র টাকা পাঠাচ্ছে। কিন্তু সব টাকা দুর্নীতির জন্য গায়েব হয়ে যাচ্ছে।”

বৃহস্পতিবারের সভা থেকে নড্ডা জানান, তাঁদের সরকার দুর্নীতির সঙ্গে কোনওরকম আপস করবে না। তারা রাজ্যে ক্ষমতায় এলে দুর্নীতিগ্রস্তদের সাজা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নড্ডা। মুখ্যমন্ত্রী যাতে বিজেপির প্রতি মানুষের ভালবাসা এবং সমর্থন দেখে রাগ না করেন, তার জন্য ভাঙা ভাঙা বাংলায় তিনি বলেন, “দিদি আপনি রাগ করবেন না। রাগ শরীরের জন্য ভাল নয়।”

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও এই কৌশল নিয়ে এগিয়েছিল বিজেপি। সে বার ভোটপ্রচারে কেন্দ্রের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের প্রচারের পাশাপাশি রাজ্যের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। শিয়রে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তবে বিজেপি আগেভাগেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিই শুরু করে দিতে চাইছে। বুথ ধরে ধরে জনসংযোগে জোর দিয়ে রাজ্যে ‘দুর্নীতি’র বিষয়টিকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে চাইছে তারা। তারই সূচনা করে গেলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement