এ ভাবেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় বিজয় শীলের দেহ। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
পুরুলিয়ার ছায়া নদিয়ার গয়েশপুরে। গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক বিজেপি কর্মীর দেহ উদ্ধার ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে সরব বিজেপি। তাদের অভিযোগ, খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে দেহ। ঘটনার প্রতিবাদে আগামিকাল সোমবার ১২ ঘণ্টার কল্যাণী বন্ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। অভিযোগ উড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
রবিবার সকালে গয়েশপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের বিজয় শীলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় গয়েশপুর শ্মশানের কাছে একটি গাছে। রান্নার গ্যাস সরবরাহের কাজ করতেন তিনি। এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী বলেই পরিচিত বিজয়। তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর আর ফেরেননি। রবিবার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন বিজয়। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে পুলিশ কিছু বলতে রাজি হয়নি। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিজয়কে সম্প্রতি প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তবে কে বা কারা সেই হুমকি দিয়েছিল, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তাঁরা।
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে জঙ্গি ডেরায় নিরাপত্তা বাহিনীর হানা, নিহত শীর্ষ হিজবুল কমান্ডার
ঘটনার খবর ছড়াতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে সরব রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সোমবার ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডাকার পাশাপাশি এ দিন গয়েশপুর থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বিজয়ের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আসেন বিজেপি নেতা শুভ্রাংশু রায়। রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে টুইটারে মুকুল রায় লিখেছেন, ‘বিজেপি কর্মী বিজয় শীলকে নৃশংস ভাবে খুন করা হল। একই কায়দায়। এ বার নদিয়ার গয়েশপুরে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলতে আর কিছু নেই’। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন অমিত মালব্য, শমিক ভট্টাচার্য, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিজেপি নেতা-নেত্রীরা।
আরও পড়ুন: ‘হাত’ চিহ্নে ভোট দিন, মুখ ফস্কালেন জ্যোতিরাদিত্য, পাল্টা খোঁচা কংগ্রেসের
যদিও কল্যাণীর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি অহেতুক এ নিয়ে রাজনীতি করছে।’’
গত বছর লোকসভা ভোটের মুখে পুরুলিয়ার বলরামপুরে সুপুরডি গ্রামে বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতোর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তার দু’দিনের মাথায় ফের ইলেকট্রিকের হাই টেনশন টাওয়ারে ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে দুলাল কুমারের দেহ। দুই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল সেই সময়। তার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।