গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
তাঁর সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে ‘অস্বাভাবিক’ হারে। সোমবার রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং পার্থ ভৌমিক এই অভিযোগ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। দিলেন সম্পত্তির হিসাব। সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে মন্ত্রী শশীকে পাল্টা আক্রমণ করে সৌমিত্রের মন্তব্য, “আপনার দলের মালিক বা মালকিনের মতো আমি চোর নই। সততার সঙ্গে মাথা উঁচু করে রাজনীতি করি।’’
বিষ্ণুপুর শহরের ঝাপড় মোড়ে এমপি অফিস থেকে সৌমিত্র বলেন, ‘‘২০০২ সাল থেকে আমি আয়কর দিয়ে আসছি। ২০১১ সালে যখন প্রথম বার বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিলাম, তখন হলফনামায় নিজের সম্পত্তির হিসাব দিয়েছিলাম। ১৮ লক্ষ টাকার হিসাব দিয়েছিলাম। তার পর তিন বছর বিধায়ক হিসাবে এবং প্রায় ৯ বছর সাংসদ হিসাবে আমি প্রায় এক কোটি ৯৪ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা ভাতা পেয়েছি।’’ সৌমিত্রের সংযোজন, ‘‘আমার মায়ের নিজস্ব নির্মাণের ব্যবসা রয়েছে। মা ১৯৯১ সাল থেকে আয়কর দিয়ে আসছেন। বাবা এক সময় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী ছিলেন। পরে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে বাবা বিদেশি মদের ব্যবসায় নামেন। ওই ব্যবসা অবশ্য আমার দাদুর আমলের। ৭০ থেকে ৮০ বছরের পুরোনো ব্যবসা। এ ছাড়াও আমাদের কয়েক কোটি টাকার পারিবারিক জমি রয়েছে। যা উত্তরাধিকার সূত্রে আমার পরিবার পেয়েছে।’’
সোমবার তৃণমূলের দুই মন্ত্রী বিজেপির মোট ছ’জন নেতার নাম নেন। অভিযোগ করেন, তাঁদের সম্পত্তি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেলেও ইডি বা সিবিআই সেখানে যায় না। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী এবং সৌমিত্রের নাম নেন শশী। এই প্রেক্ষিতে একে একে নিজের এক একটা সম্পত্তির হিসাব দিতে শুরু করেন বিজেপি সাংসদ। সৌমিত্র বলেন, ‘‘আমার দেশের বাড়ি দুর্লভপুরে নিজের একটি ২২ লক্ষ টাকার বাড়ি রয়েছে। ১০ লক্ষ টাকার স্কর্পিও গাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া তিন লক্ষ টাকার একটি জমি কিনে তার উপর ১২ লক্ষ টাকার একটি বাড়ি করেছি। মা ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে বিষ্ণুপুরে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। বাবা ২০০২ থেকে ’২৩ সাল পর্যন্ত মোট ৩৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি কিনেছেন।’’ নিজের আয়-ব্যায়ের হিসাব দিয়ে সৌমিত্র বলেন, ‘‘বাবা- মা এবং আমার সম্পত্তি মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, তা প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার মতো। অথচ, আমি ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ভাতা পেয়েছি এক কোটি ৯৪ লক্ষ টাকার উপর। এই অর্থের সবটাই আমার সাদা টাকা।’’ তার পর সৌমিত্র শশীকে নিশানা করেন, ‘‘আপনার মালিক বা মালকিন চোর বলে রাজ্যের সমস্ত রাজনীতিবিদ চোর হতে পারে না। আপনাকে আমার চ্যালেঞ্জ, আপনি আমার মুখোমুখি বসুন। আমি সততার সঙ্গ রাজনীতি করি। মিথ্যা মামলা করে আমাকে অনেক ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন। আমি সে সবে ভয় পাই না।’’