Public Accounts Committee

PAC: পিএসি-কাণ্ডে বিজেপির কমিটি ত্যাগ, স্পিকারের মুখে ‘আইনের’ কথা

বিজেপি বিধায়কদের পাল্টা দাবি, চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে বৈঠকে সভাপতিত্বের প্রশ্নই নেই!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১ ০৪:০২
Share:

ফাইল চিত্র।

বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়কে বসানোর সিদ্ধান্তকে ঘিরে শাসক পক্ষের সঙ্গে সংঘাত আরও বাড়িয়ে চলতি বিতর্ককে জাতীয় স্তরে টেনে নিয়ে যাওয়ার কৌশল নিল বিরোধী দল বিজেপি।

Advertisement

পিএসি-র শীর্ষ পদে দীর্ঘ দিনের প্রথা ভাঙা এবং ‘অনৈতিক পদক্ষেপের’ প্রতিবাদে বিধানসভায় তাঁদের পাওয়া ৮টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে মঙ্গলবার ইস্তফা দিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের দ্বারস্থ হলেন বিজেপি বিধায়কেরা। বাংলায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে শাসক তৃণমূল কী ভাবে ‘গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ’ করছে, তার দৃষ্টান্ত হিসেবে পিএসি-বিতর্কের কথা রাষ্ট্রপতি, লোকসভার স্পিকার এবং অন্যান্য রাজ্যের বিধানসভার পরিষদীয় নেতা ও বিরোধী দলনেতাকে জানানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে বিজেপি। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বিরোধীদের এই প্রতিবাদকে নস্যাৎ করে বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল যেখানে পারে যাক! যা করেছি, আইন মেনেই করেছি।’’ প্রসঙ্গত, রাজভবনে গিয়ে আজ, বুধবার বিকালে রাজ্যপালের সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

বিজেপির মনোজ টিগ্গা, মিহির গোস্বামী, অশোক কীর্তনীয়া, কৃষ্ণ কল্যাণী, আনন্দময় বর্মণ, নিখিলরঞ্জন দে, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ও দীপক বর্মণ— এই ৮ জন বিধায়ক এ দিন স্পিকারের কাছে গিয়ে ৮টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে একসঙ্গে ইস্তফা দিয়েছেন। স্পিকার অবশ্য জানিয়েছেন, পদত্যাগপত্র পেলেও ইস্তফা গ্রহণ করা হবে কি না, তা পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত হবে। তা ছাড়া, ওই কমিটিগুলির বৈঠকও ডেকে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি বিধায়কদের পাল্টা দাবি, চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে বৈঠকে সভাপতিত্বের প্রশ্নই নেই!

Advertisement

বিধানসভা থেকেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে রাজভবনে গিয়েছিলেন বিরোধী বিধায়কেরা। শুভেন্দুর অভিযোগ, বিধানসভায় এই প্রথম পিএসি চেয়ারম্যান নিয়োগে ৩০২ ধারা ভাঙা হল। বিজেপির বক্তব্য, বিজেপির যে ৬ জন বিধায়ক পিএসি-র সদস্য হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কাউকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করতেই পারতেন স্পিকার। কিন্তু ওই পদের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে মুকুলবাবুকে, যাঁর মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক ও সমর্থক ছিলেন যথাক্রমে পাহাড়ের তামাংপন্থী মোর্চা বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা ও তৃণমূলের তরুণ মাইতি। বিজেপির কেউ তাঁর মনোনয়নে সই করেননি, স্বয়ং মুকুলবাবুও নিজের টুইটার হ্যান্ডলে তৃণমূল নেতার পরিচয় ব্যবহার করছেন। শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগের জন্য আমরা আবেদন করেছি, সেই আবেদনের শুনানি ধার্য হয়েছে। তার আগেই সেই ব্যক্তিকে বিজেপি বিধায়ক বলে চিহ্নিত করে দিলে বিচারের আর কী জায়গা থাকে?’’

জবাবে স্পিকার বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন নিয়ে বিরোধীরা দাবি করছে। সেটা নিয়ে এখানকার বিরোধীরা দাবি তুলবে? এখানে যা হয়েছে, আইন মেনেই হয়েছে।’’

বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে বিরোধী দল বিজেপির বাধায় ভাষণ পড়তে পারেননি রাজ্যপাল ধনখড়। সচরাচর সব বিষয়ে মন্তব্য করলেও ওই ঘটনার প্রসঙ্গে তার পরে আর ধনখড় মুখ খোলেননি। তবে এ দিন বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধিদল তাঁর কাছে আসছে, সেই খবর সকালেই টুইট করে জানিয়েছিলেন তিনি। শুভেন্দুরা তাঁর সঙ্গে দেখা করার পরেও ভিডিয়ো-সহ টুইট করে বিরোধীদের অভিযোগপত্র সামনে এনেছেন রাজ্যপাল।

পিএসি-বিতর্ক প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন আসানসোলে মন্তব্য করেছেন, ‘‘দল আগেই ঘোষণা করেছিল, সরকার যদি চালাকি করে, তবে আমরাও সহযোগিতা করব না। পিএসি-র চেয়ারম্যানের জন্য পদ্ধতিগত ভাবে বিরোধীদের থেকে নাম পাঠানো হয়। এ বার সেই নাম থেকে চেয়ারম্যান হয়নি। তাই আমরা ঠিক করেছি, কোনও স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদে থাকব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement