বিজেপি বিধায়কদের নিশানায় রাজ্যাপাল সিভি আনন্দ বোস। — ফাইল চিত্র।
হাতেখড়ির আগে একরকম, হাতেখড়ির পরে আরেক রকম কথা বলেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্যপালের বক্তৃতার উপর আলোচনায় প্রথম থেকেই রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে আক্রমণাত্মক ছিলেন গেরুয়া শিবিরের বিধায়কেরা। আক্রমণের সূচনা করেন খড়গপুর সদরের অভিনেতা বিধায়ক হীরণ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মানুষের স্বার্থে কথা বলা উচিত রাজ্যপালের। কিন্তু তিনি সেসব না করে রাজ্যের শাসকদলের তৈরি করে দেওয়া ভাষণ পাঠ করেছেন। যেখানে তিনি রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সেখানে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে।” একই সুরে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “রাজ্যপালের ভাষণকে আমরা দু’ভাগে ভাগ করতে পারি। হাতেখড়ির আগে ও হাতেখড়ির পরে। হাতেখড়ির আগে যখন তিনি এসেছিলেন, সেই সময় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। আর হাতেখড়ির পরে বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে ভাষণ দিতে।”
এই বিজেপি বিধায়ক অভিযোগ করেন, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় যখন রাজ্যপাল এসেছিলেন, তখন তাঁর দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস হয়েছে। যেখানে রাজ্য সরকার সঠিক ভাবে প্রশাসন পরিচালনা করেনি। ফলে অনেক মানুষ খুন হয়েছেন। আর বিধানসভায় এসে তিনি যে বক্তৃতা করেছেন, তা আগের বক্তৃতার থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছেন।” অগ্নিমিত্রার যুক্তির স্বপক্ষে রাজ্য বিধানসভায় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ বলেন, “আমরা বিজেপি বিধায়কদের এই আচরণকে সমর্থন করি না। সংসদে যখন রাষ্ট্রপতির ভাষণ নিয়ে আলোচনা হয়, তখন কোনও সাংসদ রাষ্ট্রপতিকে আক্রমণ করেন না। আর এখানে বিজেপি বিধায়কেরা রাজ্যপালকে বলছেন মিথ্যা ভাষণ দিয়েছেন। এমন কথা যে পবিত্র বিধানসভায় বলা যায় না সেই শিক্ষাটুকুও বিজেপি বিধায়কদের নেই।”