হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। —ফাইল চিত্র।
বনগাঁ জেলায় মণ্ডল স্তরের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করলেন হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। মঙ্গলবার একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন তিনি। যেখানে ছত্রে ছত্রে রয়েছে সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে তাঁর ক্ষোভ এবং আগামী দিনে বিজেপির পথ চলা নিয়ে আশঙ্কার কথা। তিনি লিখেছেন, “মাননীয় সুব্রত ঠাকুর মহাশয় আমাকে বললেন মন্ত্রী মহাশয় ( কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর) বাড়িতে এলে ২৭ তারিখে আমাদের পাঁচ জন বিধায়ককে নিয়ে একসঙ্গে ঠাকুরবাড়িতে বসে বৈঠকের পর সকলের মত নিয়ে মণ্ডল সভাপতি নির্ধারণ করা হবে। সবাইকে আমি সেই কথাই বলে দিয়েছিলাম। হঠাৎ করে কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মণ্ডল সভাপতিদের লিষ্ট বেরিয়ে গেল? ব্যাপারটা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন দেখছি চার দিক থেকে প্রকৃত লড়াকু বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ভীষণ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।”
মতুয়া সম্প্রদায়ের এই বিধায়ক আরও লিখেছেন, “আমি হরিণঘাটার জনগণের কাছে বলছি, দেখুন আমি এক জন কবি মানুষ। উদ্বাস্তদের নাগরিকত্ব সুরক্ষার জন্য এই রাজনীতিতে এসে আপনাদের আশীর্বাদে বিধায়কও হয়েছি। এই সব দেখে আমার আর ভাল লাগছে না। জানি না এর ফলাফল ভবিষ্যতে কত দূর গড়াবে। আমার কাউকে কিছু বলার আর ভাষা নাই।” মণ্ডল সভাপতি মনোনয়ন নিয়ে বনগাঁ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের কথাও নিজের ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন অসীম। তিনি লিখেছেন, “দেবদাসদা আমাকে কথা দিয়ে বলেছিলেন, জেলা কমিটি এবং মণ্ডল কমিটি অবশ্যই লোকাল বিধায়কদের মতামত নিয়েই করবেন। সেই দেবদাসদা এই ভাবে কথা নষ্ট করবেন আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারছি না। তবে আমি সবার হাতেপায়ে ধরে বলছি, ঠাকুর মহাশয়কে (বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর) জয়ী করার জন্য আমাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়া ভাল।”
ফেসবুক পোস্ট নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন অসীম। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, “আমি কবি মানুষ। মানুষ এবং দলের জন্য আজ বিধায়ক হয়েছি। তাই তাঁদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। নিজের ক্ষোভ গোপন না রেখে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সকলকে জানিয়ে দিয়েছি।” মঙ্গলবার সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে তাঁর ক্ষোভের কথা যে তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জানিয়ে দিয়েছেন, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর ফেসবুক পোস্টের একটি অংশে লেখা হয়েছে, “আমি মাননীয় সুব্রত ঠাকুর (গাইঘাটার বিধায়ক তথা বনগাঁর ঠাকুরবাড়ির প্রতিনিধি) মহাশয়কে ফোন করে বিষয়টা জানতে চাইলাম। বড় ঠাকুর মহাশয় বললেন, ‘আর বসাবসি কিসের? যা যা হবার তা তো হয়েই গেছে। আমাদের বিধায়কদের তো এক পয়সাও মূল্য ওরা দিল না।’” অসীমের দাবি, বনগাঁ লোকসভার অধীন বিজেপির পাঁচ জন বিধায়ক এই সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে খুশি নন।