মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ি। নিজস্ব চিত্র।
তপনের দণ্ডিকাণ্ডের জল গড়িয়ে এ বার এল গঙ্গাপারের নবান্নে। তৃণমূল থেকে বিজেপি হয়ে ফের শাসকদলে ফিরে আসার ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করতে হয়েছে ৪ আদিবাসী মহিলাকে। তাঁদের দিয়ে দণ্ডি কাটানো হয়। ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ি। আগামী দিনে এই ধরনের অমানবিক ঘটনা রুখতে ১৯৮৯ সালের তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইন প্রয়োগ করার কথাও মমতাকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সম্প্রতি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে প্রায় ২০০ জন মহিলা তাঁদের পরিবার-সহ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এর পর ফের তৃণমূলে ফিরে আসায় ৪ মহিলাকে ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করাতে দণ্ডি কাটানো হয়। ওই ৪ জন মহিলা তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের। এই ঘটনায় সরব হয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ চেয়ে সোমবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে জাতীয় তফসিলি জনজাতি কমিশনের চেয়ারপার্সনকেও চিঠি লিখেছেন তিনি। এ বার ওই ঘটনায় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন পদ্মশিবিরের এক বিধায়ক।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল মহিলা মোর্চার প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে দলে ফেরানো হয়েছিল ওই আদিবাসী মহিলাদের। অভিযোগ উঠেছে, বালুরঘাট কোর্ট মোড় থেকে পার্টি অফিস পর্যন্ত দণ্ডি কাটিয়ে আবার তৃণমূলে যোগদান করানো হয় তাঁদের। প্রদীপ্তা তার পর বলেছিলেন, ‘‘ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে তাঁরা নিজেরাই বালুরঘাট কোর্ট মোড় থেকে পার্টি অফিস পর্যন্ত দণ্ডি কেটে এসে আবার তৃণমূলে যোগদান করেন।’’ এ নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই প্রদীপ্তাকে মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হয় স্নেহলতা হেমব্রমকে। ঘটনাচক্রে, তিনি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছেন অশোক। লিখেছেন, দলের সর্বময় নেত্রী হিসাবে মমতার এই পদক্ষেপ তৃণমূলের জন্য যথোপযুক্ত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এই ঘটনায় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন অশোক।
চলতি বছরেই পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। বছর ঘুরলে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে দণ্ডি কাটার ঘটনাকে ‘হাতিয়ার’ করে বাংলার শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রীকে বিজেপি বিধায়কের চিঠি নতুন মাত্রা যোগ করল।