Mamata Banerjee speaks with Firhad Hakim

পার্কিং ফি বৃদ্ধি বিতর্কের মধ্যেই নবান্নে সরকারি কর্মসূচির ফাঁকে একান্তে কথা মমতা-ফিরহাদের

কলকাতায় পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই এক মঞ্চে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিমকে। একান্তে কথা বললেন দু’জনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:৩৮
Share:

অ্যাম্বুল্যান্স উদ্বোধনের ফাঁকে ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র।

বরফ কি তবে গলল? কলকাতায় পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার নিয়ে ফিরহাদ হাকিম (ববি) এবং তৃণমূলের অন্দরের সমীকরণ ঘিরে জোর আলোচনা চলছে এখনও। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে একই মঞ্চে মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ। সোমবার নবান্নে ৩৫টি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুল্যান্সের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মঞ্চেই ছিলেন কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী। উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের ফাঁকে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কিছু ক্ষণ কথা বলেন মমতা এবং ফিরহাদ। তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানা যায়নি।

Advertisement

সম্প্রতি কলকাতা পুর এলাকায় পার্কিং ফি বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অন্ধকারে রেখেই’ একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি পাশাপাশিই জানান, পুরসভা ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেবে। যার প্রেক্ষিতে ফিরহাদ বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বললে তিনি অবশ্যই বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহার করে নেবেন। কিন্তু সেটা দলের অন্দরেও বলা যেতে পারত। সাংবাদিক ডেকে না বললেও চলত! ঘটনাচক্রে, ওইদিন সন্ধ্যায় বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহার করার জন্য পুরসভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করে দেয় তৃণমূল। যদিও পুরসভার তরফে তখনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। সেই বিজ্ঞপ্তি জারি হয় রাতে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, ওইদিন সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মেয়রের কথা হয়েছিল। তখনই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন, ‘বিতর্ক’ না বাড়িয়ে বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহার করে নিতে। তার পরেই মেয়র বিষয়টি মেনে নেন। কিন্তু বিষয়টি যে ভাবে ‘প্রকাশ্যে’ আনা হয়েছিল, তা নিয়ে মেয়রের অনুযোগ সম্পর্কে আসরে নামে বিরোধীরা। ‘আত্মসম্মান রক্ষার্থে’ ফিরহাদের মেয়র পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে নানা মন্তব্যও করা হয়।

Advertisement

এই আবহে পরদিন আবার কুণাল বলেন, ‘‘ববিদা সিনিয়র মন্ত্রী, নেতা। পুরপ্রশাসনেও অভিজ্ঞ। তাঁর সঙ্গে বিরোধের কোনও ব্যাপার নেই।’’ বিষয়টি ‘ক্লোজ্ড চ্যাপ্টার’ বলেও মন্তব্য করেন কুণাল। তার পরে ওই নিয়ে আর কথা বাড়াননি ফিরহাদও। তবে রবিবার কলকাতার মেয়রের এক মন্তব্য ঘিরে আবার চর্চা শুরু হয়। চেতলায় এক অনুষ্ঠানে ফিরহাদ বলেন, ‘‘২৫ বছর ধরে আমি কাউন্সিলর। আপনাদের সেবা করেছি। আমার বয়স হয়ে গিয়েছে। মানুষ আসবে, মানুষ যাবে, উন্নয়ন থাকবে। আজকের বাচ্চা ছেলেরা সমাজের মাথা হবে, সমাজের উন্নয়ন করবে।’’ দলের ‘অভ্যন্তরীণ চাপে’ পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা এবং জল্পনায় ফিরহাদের এই মন্তব্য নতুন মাত্রা যোগ করে।

তার মধ্যেই সোমবার এক মঞ্চে দেখা গেল মমতা-ফিরহাদকে। অ্যাম্বুল্যান্স উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দিক্‌নির্দেশে গরিব মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় নতুন দিগন্ত খুলে গেল। মুখ্যমন্ত্রীকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’ ফিরহাদের সঙ্গে একান্তে কথা বলার পরেই বলতে উঠে মমতা শুরুতেই ফিরহাদকে ‘আমার সহকর্মী’ বলে উল্লেখ করেন। অ্যাম্বুল্যান্স উদ্বোধনের সময় দু’জনে হাসিমুখে সবুজ পতাকাও নাড়েন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement