সাংগঠনিক বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব।—নিজস্ব চিত্র।
কথায় কথায় সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলা যাবে না। কথা বলার জন্য মুখপাত্ররা রয়েছেন। সকলে কথা বলবেন না। সূত্রের খবর, এই ভাষাতেই রবিবার রাজ্য বিজেপি নেতাদের সতর্ক করেছেন দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিব প্রকাশ। সেই সঙ্গে দল ক্ষমতায় এলে কে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন তা নিয়েও কোনও মন্তব্য করা চলবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। শিব প্রকাশ কারও নাম না নিলেও রাজ্য বিজেপি-র নেতারা মনে করছেন, দলের যুব সভাপতি সৌমিত্র খাঁকে উদ্দেশ্য করেই এই কড়া মনোভাব দেখিয়েছেন তিনি। কারণ, কিছুদিন আগেই দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে মন্তব্য করেন সৌমিত্র।
রবিবার কলকাতায় আইসিসিআর-এ রাজ্য বিজেপির বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠক হয়। সেখানে শিব প্রকাশ ছাড়াও ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। ডাকা হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকেও। এ ছাড়াও রাজ্য নেতৃত্বের অন্যান্যদের পাশাপাশি ৫টি জোনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ডাকা হয়। বৈঠকে আসতে বলা হয়েছিল বিভিন্ন শাখা সংগঠনের সভাপতিদেরও। সেই হিসেবে বৈঠকে ছিলেন সৌমিত্রও। সেখানেই কড়া মনোভাব দেখান দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে হাজির এক রাজ্য নেতা জানিয়েছেন, সবাইকেই কথায় কথায় সংবাদমাধ্যমের সামনে মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়। দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে কারও বক্তব্য যেন আলাদা না হয়।
এই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী? এই প্রশ্ন বারবার উঠলেও বরাবর কৌশলী উত্তর দিয়েছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। 'বাংলার ভূমিপুত্র'-ই মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে রাজ্য সফরে এসে সরাসরি জবাব এড়িয়েছেন খোদ অমিত শাহ। দল যেখানে এমন নীতি নিয়েছে সেখানে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র বলেন, "শুভেন্দুদার নেতৃত্বে তৃণমূল ভাঙবে। দিলীপ ঘোষ বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হবেন। কলকাতার অনেক তৃণমূল নেতা বলছেন, দিলীপ ঘোষ কী জানেন? আমি বলছি, দিলীপ ঘোষ একজন অরিজিনাল নেতা।"
আরও পড়ুন: জোট হলে কংগ্রেসের জেতা আসনে প্রার্থী দেবেন না আব্বাস, দাবি সোমেন পুত্রের
সৌমিত্রর এই মন্তব্যের পরে হইচই পড়ে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্য বিজেপির পাশাপাশি অস্বস্তিতে পড়েন দিলীপও। পরে তিনি বিষয়টি সৌমিত্রর 'ব্যক্তিগত মত' বলে উল্লেখ করেন। নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ের সময় দলীয় সিদ্ধান্তের উল্টো সুর যে বিজেপি শুনতে চাইছে না তা আগেই স্পষ্ট করেছেন নেতৃত্ব। পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিজেপিতে আসতে পারেন এমন জল্পনা তৈরি হলে 'আপত্তি' জানিয়ে মন্তব্য করায় দল কড়া পদক্ষেপ করেছিল রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল-সহ চার নেতার বিরুদ্ধে। এ বার সরাসরি না বলা হলেও ঠারেঠোরে সতর্ক করা হল সৌমিত্রকে। একই সঙ্গে সাবধান করা হল অন্যান্যদেরও।
আরও পড়ুন: বিজেপিকে ঠেঙিয়ে তাড়ান, এ বার সরাসরি নিদান অনুব্রতর