তথাগত রায়। বিতর্ক যেন ছায়াসঙ্গী। ফাইল চিত্র
তথাগত রায়। তিনি বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। তিনি উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্য সামলানো প্রাক্তন রাজ্যপাল। তবে নেট মাধ্যমে তিনি বরাবরই বিতর্ক তৈরিতে ওস্তাদ। কিন্তু এ বার যেন একটু মাত্রা ছাড়াই আক্রমণ শানালেন তিনি। তাঁকে কেউ ‘দাদু’ সম্বোধন করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ৭৫ বছরের তথাগত। লিখেছেন, ‘যারা আমাকে 'দাদু' সম্বোধন করে তাদেরকে আমার আশীর্বাদ জানাই। শুধু সেই সব নাতি-নাতনিদের কাছে একটা প্রশ্নের উত্তর কিছুতেই পাচ্ছি না। 'দাদু' মানে তো বাবার বাবা ও মায়ের বাবা দুই-ই হয়।’ এখানেই না থেমে তথাগতর টুইটে প্রশ্ন, ‘আমি তাদের মধ্যে কাদের বাবার এবং কাদের মায়ের জন্ম দিয়েছিলাম?’
তথাগতকে নিয়ে রাজ্য বিজেপি অনেকবারই বিড়ম্বনায় পড়েছে। অনেক মন্তব্যের পরেই দলে এমনটাও আলোচনা হয় যে, ‘পদ্ম বনে তিনি হচ্ছেন মত্ত হস্তি’। এ বারেও নিন্দার ঝড় উঠলে দলকে বিব্রত হতে হবে বলেই মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা।
এর আগে তথাগত নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধেও নানা কথা লিখে আলোচনায় এসেছেন। প্রায় সময়েই তথাগতর তিরের অভিমুখ থেকেছে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দিকে। বাদ যান না কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেননরাও। সে সব নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। সম্প্রতি সংসদে ভুল বানানের প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধরনা দিয়ে বিভিন্ন মহলের কটাক্ষের মুখে পড়েন দিলীপ ঘোষ। ‘কন্যাশ্রী’ বানান ‘কন্নাশ্রী’ লেখা নিয়ে অনেক সমালোচনাও শুনতে হয়। তা নিয়ে আক্রমণ করেন তথাগতও। লিখেছিলেন, ‘এই জন্যেই বিদ্যাসাগর মশাই বলে গিয়েছেন, ‘‘মূর্খের অশেষ দোষ।’’ পোস্টারটা যে ছেপেছে তার কথা বলছি। বাংলা বর্ণমালার হ্রস্ব-ই বর্ণটা পর্যন্ত চেনা যাচ্ছে না!’
দিলীপ সে সব নিয়ে জবাব না দিলেও তার আগে বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্তর সঙ্গেও টুইট যুদ্ধ লাগে তথাগতর। মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার পরে ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে আসা নেতাদের ‘ট্রয়ের ঘোড়া’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তথাগত। এর জবাবে স্বপন লিখেছিলেন, ‘বাংলায় ২০১৯-এর মে মাসের পর যাঁরা বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের সকলকে ট্রয়ের ঘোড়া হিসেবে দেখা অন্যায়। নবাগতদের অনেকেই অন্তরিক ভাবে ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। কোনও পরিস্থিতিতেই তাঁদের অবাঞ্ছিত বোধ করানো উচিত নয়। রাজনীতি বাদ দেওয়ার খেলা নয়। খারাপ সময়ে পাশে থাকতে হয় এবং নতুন নেতা তৈরি করতে হয়।’