NIA Attack

ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল এনআইএ, তার পরেই গাড়িতে হামলার ঘটনা

গ্রামে অভিযানে যাওয়ার কথা জানিয়ে স্থানীয় থানায় বাহিনী চেয়েছিল এনআইএ। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, বাহিনী দেওয়ার আগেই গ্রামে ঢুকে পড়েন এনআইএ আধিকারিকেরা। তার পরেই হামলার ঘটনা বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১১:২৩
Share:

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে এনআইএ-কে। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া।

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে এনআইএ। এ বার তা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিল বিজেপি। রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিচারব্যবস্থার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, যে দু’জনকে আটক করেছিল এনআইএ, সেই বলাই মাইতি এবং মনোব্রত জানাকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ।

Advertisement

২০২২ সালের ডিসেম্বর ভূপতিনগরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে মৃত্যু হয় তৃণমূলের বুথ সভাপতি-সহ অন্তত তিন জনের। প্রথমে ভূপতিনগর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত আরম্ভ করে। পরবর্তী কালে আদালতের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। সেই মামলাতেই ভূপতিনগরের কয়েক জন বাসিন্দাকে তলব করেছিল তদন্তকারী সংস্থাটি। কিন্তু সূত্রের খবর, তলবে সাড়া দেননি তাঁরা। তাই নিজেরাই অভিযানে নামে এনআইএ। তার পরেই আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ। যা নিয়ে রাজ্য সরকারের দিকে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি কেন্দ্র এবং বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সুকান্তের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই ঘটনা ঘটেছে। সুকান্ত বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি ঘটেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে। স্থানীয় মানুষ নন, এঁরা চিহ্নিত তৃণমূল নেতা এবং কর্মী। যে ভাবে একের পর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর আক্রমণ হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গকে দেখে মাঝেমাঝে আমাদের মনে হচ্ছে আফগানিস্তানে পরিণত হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয়, কেন্দ্রীয় সরকার, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি এবং বিচারব্যবস্থার খুব তাড়াতাড়ি হস্তক্ষেপ করা উচিত। নচেৎ, পশ্চিমবঙ্গ আগামিদিনে ভারতের অঙ্গরাজ্য থাকবে, না কি থাকবে না, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। বার বার দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে তৃণমূলের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনেরও এই দল সম্পর্কে ভাবা উচিত।’’

গোটা বিষয়টিকে ভোটে জিততে বিজেপির চক্রান্ত বলে অভিহিত করেছে তৃণমূল। রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ভূপতিনগরের ঘটনা অবাঞ্ছিত, অনভিপ্রেত। কিন্তু এর পিছনে একটি গভীর প্রেক্ষিত কাজ করছে। সিবিআই, ইডি, এনআইএ— এগুলিকে ব্যবহার করছে বিজেপি। আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, কিছু দিন আগে বিজেপির নেতারা এনআইএর এক অফিসারের সঙ্গে বসে নাম ঠিক করে দিচ্ছেন। তৃণমূলের নেতাদের, সংগঠকদের ধরতে হবে, সমন পাঠাতে হবে। যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, তা তো বিজেপির বানানো। তৃণমূল কর্মীদের নাম দিয়ে দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে। ফলে যখন সাতসকালে, কাকভোরে বহিরাগত অনেকে যখন তাঁদের ধরতে যাচ্ছে, স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় একটা উল্টো স্পন্দন ঘটছে। আমরা বলছি, এই ঘটনা অবাঞ্ছিত। কিন্তু এর পিছনে একটা অঙ্ক কষা দাবার বোর্ড রয়েছে।’’

Advertisement

গ্রামে অভিযানে যাওয়ার কথা জানিয়ে স্থানীয় থানার কাছে বাহিনী চেয়েছিল এনআইএ। কিন্তু পুলিশ সূত্রে খবর, বাহিনী দেওয়ার আগেই অভিযানে নেমে পড়ে এনআইএ। যদিও এনআইএর সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ছিল। হামলার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ঘটনা নিয়ে লিখিত ভাবে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে এনআইএ। অন্য দিকে, বলাই মাইতি এবং মনোব্রত জানা নামে যে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গাড়িতে তুলেছিল এনআইএ, তাঁদের দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে এনআইএ। ধৃতেরা তৃণমূলের কর্মী বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement