বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র
‘গরুর দুধে সোনা পাওয়া যায়’ বলে অতীতে বিতর্কে জড়ানো বিজেপি রাজ্য সভাপতি ‘ঘোষ’ দিলীপ শুক্রবার বুঝিয়ে দিলেন তিনি তাঁর পুরনো তত্ত্বেই অনড় রয়েছেন।
শুক্রবার কলকাতার হেস্টিংসে রাজ্য বিজেপি-র দফতরে ছিল দলের কৃষক শাখার কর্মসূচি। বিজেপি কিসান মোর্চার সেই অনুষ্ঠানেই রাজ্যে পশুপালনে জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। সেই প্রসঙ্গপরেওঠে সাংবাদিক বৈঠকেও। সেখানেই দিলীপ বলেন, ‘‘কলকাতা বা তার আশপাশের জেলায় গো-পালন প্রায় হয়ই না। আমরা প্যাকেট দুধ খাচ্ছি। আমি বলেছিলাম, দুধে সোনা পাওয়া যায়। অনেকে তার বিরোধিতা করেছিলেন।কিন্তু যাঁরা আসল দুধই খাননি, তাঁরা সোনার দর বুঝবেন কী ভাবে?’’
অতীতে গরুর দুধ প্রসঙ্গে মন্তব্য করে দলের বাইরে তো বটেই, ভিতরেও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন দিলীপ। আক্রমণ শানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতারাও। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘দিলীপবাবু যদি সেই আসল গরুর সন্ধান দিতে পারেন, তাহলে তা নিয়ে গবেষণার ব্যবস্থা হবে।’’
এর আগে ‘গরুর দুধে সোনা’ প্রসঙ্গে মন্তব্য করে দিলীপ বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর। লোকসভা নির্বাচনের পর সদ্য সাংসদ হওয়া দিলীপ বর্ধমান শহরের টাউনহলে ‘ঘোষ এবং গাভীকল্যাণ সমিতি’র সভায় যোগ দিয়েছিলেন। ওই দিন দিলীপ বলেছিলেন, ‘‘গরুর দুধে সোনার ভাগ থাকে। তাই দুধের রং হলুদ হয়।’’ এই দাবির ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘দেশি গরুর কুঁজের মধ্যে স্বর্ণনাড়ি থাকে। সূর্যের আলো পড়লে, সেখান থেকে সোনা তৈরি হয়।’’
দিলীপের এই মন্তব্যের পরে জোর বিতর্ক শুরু হয়। নেটমাধ্যমে তো বটেই বিজ্ঞানী-বিশেষজ্ঞরাও ‘দিলীপ-তত্ত্ব’ শুনে অবাক হয়েছিলেন। বলেছিলেন, এমন ‘বৈজ্ঞানিক’ গবেষণা পৃথিবীর কোথাও হয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই। সেই বিতর্কের সময় বিজেপি-র অন্দরেও কম হাসাহাসি হয়নি। এ বার সেই বিতর্ক নতুন করে উস্কে দিলেন দিলীপ। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, ‘‘দিলীপদা, এ দিন বৈঠকে যেটা বলতে চেয়েছেন তার ভুল মানে করা হচ্ছে। দুধের গুরুত্ব যে সোনার সমান সেটাই বলতে চেয়েছেন।’’
তবে ‘দিলীপ’ আর ‘গরুর দুধে সোনা’ প্রসঙ্গ মানেই পুরনো কথা মনে পড়ে যায় আম জনতার। গত ১ জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে একটি নির্দোষ পোস্ট করেন দিলীপ। লিখিছিলেন, ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবসে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যকে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই হোক লক্ষ্য।’ এমন নিরাপরাধ আবেদনেও নেটাগরিকদের কাছ থেকে ছাড় পাননি দিলীপ। ‘দুধ ও সোনা’ প্রসঙ্গে ভেসে গিয়েছিল ফেসবুক ও টুইটার।