— প্রতীকী চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বেঁধে দেওয়া এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাজ্যে যে পূরণ হচ্ছে না, সেটা স্পষ্ট বলেই মত বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের। তাঁরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত অনলাইনে সদস্য হয়েছেন ৪০ লক্ষ। খাতায়-কলমে সদস্য করা হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ জনকে। এই পরিস্থিতিতে লক্ষ্য, অন্তত ‘প্রথম ডিভিশন’ পাওয়া, অর্থাৎ মোট ৬০ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ। তবে এ রাজ্যে সদস্য সংগ্রহের কাজে স্বচ্ছতার প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
সদস্য সংগ্রহের বিষয়ে ইতিমধ্যেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল থেকে রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডেদের ‘ভর্ৎসনা’র মুখে পড়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। দেশ জুড়ে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহের শেষ দিন ৩০ ডিসেম্বর থাকলেও রাজ্যের ক্ষেত্রে তা ১০ জানুয়ারি করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রে দাবি, ওই সময়সীমার মধ্যে অনলাইন-মাধ্যমে মোট ৫০ লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, সদস্য সংগ্রহে নদিয়া দক্ষিণ, বালুরঘাট, তমলুক, জলপাইগুড়ি ও নদিয়া উত্তর প্রথম দিকে থাকলেও খারাপ হাল দার্জিলিং পার্বত্য, ডায়মন্ড হারবার, জঙ্গিপুর, বসিরহাট ও জয়নগরের মতো সাংগঠনিক জেলাগুলির। সব থেকে খারাপ অবস্থা দার্জিলিঙে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ২৫ হাজার জন সদস্য হয়েছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ে নানা মত রয়েছে বিজেপির অন্দরে। দীর্ঘদিন ধরে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে। সেখানকার বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, সাংসদ রাজু বিস্তার দেখাই মেলে না। বিস্তার পাল্টা দাবি, “দার্জিলিং ছোট জায়গা। মাত্র তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গোটা জেলা। সেখানে সংখ্যায় অনেক সদস্য কী ভাবে সংগ্রহ সম্ভব? দার্জিলিং লোকসভার মধ্যে শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা। সেখান থেকে ইতিমধ্যেই এক লক্ষ ১০ হাজার জন সদস্য হয়েছেন।” দার্জিলিং পার্বত্য জেলার মুখপাত্র সঞ্জীব দাজুর মতে, পাহাড়ে দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগ এবং বিভিন্ন মণ্ডলে অনলাইনে সদস্য-সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না থাকাতেই এই হাল। জেলার যুব মোর্চার সহ-সভাপতি সুপেন্দ্র প্রধান মনে করছেন, দল বিভিন্ন সময় নানা স্থানীয় দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করে অতীতে লড়াই করেছে। ফলে, দলের একক সাংগঠনিক শক্তি পাহাড়ে এখনও তেমন পোক্ত নয়।
১০ জানুয়ারি সদস্য সংগ্রহ শেষ হলে সাংগঠনিক নির্বাচন শুরু হবে। বুথ সভাপতি ও বুথ কমিটি নির্বাচন চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে মণ্ডল স্তরের এবং ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জেলা স্তরে সাংগঠনিক নির্বাচন হওয়ার কথা।
শনিবার বিধাননগরের হোটেলে সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্য বিজেপির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে সদস্য সংগ্রহে স্বচ্ছতার প্রশংসা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সম্প্রতি দাবি করেন, সদস্য সংগ্রহে স্বচ্ছতায় দেশে প্রথম বঙ্গ। সূত্রের খবর, সদস্য সংগ্রহে যে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়েছে এ দিন তার প্রশংসা করে বনসল একে দৃষ্টান্ত করে সাংগঠনিক নির্বাচন করার কথা বলেন। তিনি বলেন, খাতায়-কলমে কমিটি তৈরি না করে সক্রিয় কমিটি গড়তে হবে। মনোনীত কমিটির চেয়ে নির্বাচিত কমিটি যাতে গড়ে তোলা যায়, সেই দিকে জোর দিতেও বলেছেন তিনি।