জেপি নড্ডা। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’র ঘটনা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বাংলায় আরও একটি তথ্যসন্ধানী দল পাঠাচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ বার তফসিলি সম্প্রদায়ের পাঁচ সাংসদের দল গড়ে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।
পঞ্চায়েত ভোটের পর রাজ্যে এই তৃতীয় বার প্রতিনিধি দল পাঠাতে চলেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ভোটের সময় হিংসা, অশান্তির অভিযোগ ওঠা বেশ কয়েকটি জায়গা ইতিমধ্যেই ঘুরে গিয়েছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বাধীন কমিটি। বিজেপির পাঁচ মহিলা নেত্রীকে নিয়ে তৈরি প্রতিনিধি দলও বিভিন্ন হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে বৃহস্পতিবার নড্ডার কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে বলে খবর দলীয় সূত্রে। তার পরেই বিবৃতি দিয়ে বিজেপির তরফে জানানো হল, এ বার তফসিলি সম্প্রদায়ের পাঁচ নেতাকে নিয়ে তৈরি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’ বাংলা সফরে আসবে। যে সব জায়গায় হিংসা, হানাহানি ঘটেছে, সেখানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট জমা দেবে ওই দল। ওই দলে থাকবেন— বিনোদ সোনকর, সুরেশ কশ্যপ, এস মুনিস্বামী, মনোজ রাজোরিয়া এবং বিনোদ চাবড়া। যদিও দলটি কবে রাজ্যে আসবে, সেই ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
পঞ্চায়েত ভোটে বাংলার ‘হিংসাস্থল’ ঘুরে দেখতে আগেই রাজ্যে ঘুরে গিয়েছে রবিশঙ্করের নেতৃত্বাধীন কমিটি। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বিজেপি নেতা বলেছিলেন, ‘‘মমতার সরকার গণতন্ত্রের লজ্জা। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ৪৫ জন মারা গিয়েছেন এই রাজ্যে। এমনকি, গণনার দিনও অশান্তি হয়েছে। আমি বাংলার মানুষকে আশ্বাস দিচ্ছি, বিজেপি লড়াই করবে।’’ তিনি অভিযোগের সুরে জানান, মমতার সরকারের আমলে রাজনৈতিক হিংসা বাম আমলকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। পাল্টা তৃণমূলও আক্রমণ শানায় বিজেপিকে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলায় গণতন্ত্র আছে বলেই, রাজ্যের যেখানে খুশি যেতে পারছেন রবিশঙ্করেরা।’’ রবিশঙ্করেরা ফিরে যাওয়ার পরেই বিজেপির পাঁচ মহিলা সদস্যের তথ্যানুসন্ধান দল রাজ্যে আসে। সেই দলে ছিলেন রমা দেবী, কবিতা পাতিদার, অপরাজিতা ষড়ঙ্গী, সন্ধ্যা রায় এবং সরোজ পাণ্ডেরা।
ঘটনাচক্রে, ওই একই সময় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের তৈরি পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিজেপি শাসিত গোষ্ঠীহিংসায় দীর্ণ মণিপুর ঘুরে এসেছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বাধীন সেই দলে ছিলেন দোলা সেন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সুস্মিতা দেব এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মণিপুর থেকে একটি ভিডিয়ো টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেন ডেরেক। তিনি লেখেন, ‘‘অনেক মন কি বাত হয়েছে। এ বার মণিপুর কি বাত করার সময় এসেছে!’’ ঠিক তার পরেই বাংলায় আরও একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।